ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো
এসি চালানো নিয়ে খাদেম ও মুসল্লিদের মধ্যে বিরোধের জের ধরে মসজিদে তালা লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। নামাজের সময় পেরিয়ে যাবার পরও তালা না খোলায় অর্ধশতাধিক মুসল্লি সড়কে নামাজ আদায় করেন। এ ঘটনায় মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরুজ্জামান তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত মুসল্লিদের শান্ত করেন। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) রাতে এশার নামাজের সময় রাজশাহীর বাঘা উপজেলা চত্বরের মসজিদে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলা চত্বরের মসজিদের খাদেম ও মুসল্লিদের মধ্যে এসি চালানো নিয়ে দ্বিমত সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে খাদেম মূল গেটে তালা লাগিয়ে রাখেন। মঙ্গলবার রাতে এশার নামাজের আজান হলে মুসল্লিরা মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে দেখেন গেটে তালা মারা। এক এক করে প্রায় অর্ধশতাধিক মুসল্লি ওই গেটের সামনে অবস্থান নেন। শেষ পর্যন্ত গেট না খুলে দেওয়ায় মুসল্লিরা বাধ্য হয়ে তালা লাগানো গেটের সামনের সড়কে নামাজ আদায় করেন।
সড়কে নামাজ আদায়কারী ইমাম নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত উপজেলা চত্বরের মসজিদে নামাজ আদায় করি। মঙ্গলবার সেখানে মাগরিবের নামাজও আদায় করেছি। কিন্তু এশার নামাজের সময় দেখি মূল গেটে তালা। এশার নামাজের সময় পার হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তালা খুলে দেওয়া হচ্ছিল না। আমরা প্রতিবাদস্বরূপ তালা লাগানো গেটের সামনের সড়কে এশার নামাজ আদায় করেছি। এসি চালানো নিয়ে খাদেম আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে মুসল্লিদের দ্বিমত সৃষ্টি হওয়ার কারণে গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, মসজিদের গেট বন্ধ রাখার কোনো নির্দেশনা নেই। নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রাখা হয়। তবে গেটের চাবির দায়িত্বে থাকেন নৈশপ্রহরী। তার আসতে দেরি হওয়ায় কিছু মসল্লিকে উসকানি দিয়ে এমন কাজ করানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরুজ্জামান বলেন, এক ব্যক্তি নিয়মিত উপজেলা চত্ত্বরে ব্যক্তিগত গাড়ি রাখেন। নিরাপত্তার জন্য উপজেলা চত্ত্বরের মূল গেটে তালা লাগানো থাকার কারণে এ গাড়ি বের করতে পারছিলেন না তিনি। কোনো কারণবশত নৈশপ্রহরীর তালা খুলে দিতে দেরি হওয়ায় মুসল্লিদের উসকে দিয়ে এমন কাজ করিয়েছেন তিনি। উপজেলা প্রশাসনের নিরাপত্তার জন্য গেটে তালা
লাগিয়ে রাখাটা স্বাভাবিক, এমন দাবি করে সহকারী কমিশনার বলেন, যারা মুসল্লিদের উসকে দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, তারা কাজটি ঠিক করেননি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপির নির্বাচনী এলাকা বাঘা। সড়কে নামাজ আদায় নিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘এটি নিয়ে পানি ঘোলা করার কোনো সুযোগ নেই। রাতেরবেলা মসজিদের এসি নষ্ট হয়েছে। লকডাউনের মধ্যে এতগুলো এসি দ্রæত সারানো যায়নি। সেটি নিয়ে কেউ কেউ উত্তেজনা সৃষ্টি করেছেন। ধৈর্য ধারণ আমাদের ধর্মের একটি বড় দিক; এটি ভুলে গেলে চলবে না। আর কারা এ রকম পরিস্থিতিতে উসকানি দিচ্ছে, আমরা তা জানি।
একটা রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রধান হিসেবে তোমার দায়িত্ব হলো পরিস্থিতি বুঝে সেটি সামাল দেওয়া এবং সময়মতো যারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করা। যাই হোক এ রকম পরিস্থিতির যেন সৃষ্টি না হয় সেটি দেখবে আশা করি।’