ঢাকা ০৭:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজশাহী মেডিকেল থেকে ৭৯ ভাগ করোনা রোগীই ফিরেছে সুস্থ হয়ে

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো

 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত কয়েক মাস ধরেই মৃত্যুর ঘটনা থামছেই না। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা উপসর্গ নিয়ে। তবে এখানে সুস্থতার হারও একেবারে কম নয়। মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। রাজশাহী হাসপাতালের পরিসংখ্যান বলছে, করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রায় ৭৯ ভাগই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে।
রামেক হাসপাতালের তথ্যমতে, করোনা ইউনিটে এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৩১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ৩ হাজার ৭২৪ জন। মারা গেছে ১ হাজার ১০৩ জন। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়ে ৪৩৭, উপসর্গে ৬২৮ ও করোনা থেকে সুস্থ হয়ে পরবর্তী সমস্যায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা এখনো চিকিৎসাধীন।
এপ্রিল মাসে ৬৫৪ রোগী ভর্তি হয় এখানে। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছে ৫২০, মারা গেছে ৭৯ জন। এদের মধ্যে পজিটিভ ৩৬ ও উপসর্গে ৪৩ জন মারা গেছে।
মে মাসে ৮০৮ রোগী ভর্তি হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছে ৬১৭ জন। মৃত্যুবরণ করেছে ১২৪ জন। এদের মধ্যে পজিটিভ ৫৩, উপসর্গে ৭১ জন।

জুন মাসে ১ হাজার ৩৯১ রোগী ভর্তির পর সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছে ১ হাজার ৩ জন। মারা গেছে ৩৬৯, এদের মধ্যে পজিটিভ ১৬৮, উপসর্গে ১৯৪ ও করোনা-পরবর্তী সমস্যায় ৭ জনের মৃত্যু হয়।

জুলাই মাসে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আবার এ মাসে সুস্থতার হারও বেশি। এ মাসে করোনা ইউনিটে ১ হাজার ৮৭৮ জন রোগী ভর্তি হয়। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করে ৫৩১ জন। এর মধ্যে পজিটিভ ১৮০, উপসর্গে ৩২০ ও করোনা-পরবর্তী সমস্যায় ৩১ জন মারা যায়। ভয়ংকর মাস হিসেবে চিহ্নিত এই জুলাইয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ১ হাজার ৫৮৪ জন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘আমাদের এখানে চিকিৎসাধীন রোগীদের বড় একটি অংশকে আমরা সুস্থ করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এখানে নানান সীমাবদ্ধতা আছে। ডাক্তার ও নার্সের সংকট থাকলেও এখানে আধুনিক যন্ত্রপাতিও রয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি করোনা চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে যে যন্ত্রপাতি আছে অন্য মেডিকেল কলেজে এত নেই। এখানে অনেক বেশি আছে। আমরা চাহিদা পাঠালে কেউ বলেনি কেন লাগবে। তারা পাঠিয়ে দিয়েছে। আমাদের এখানে হাই ফ্লো ক্যানুলা আছে ৭২টি। বায়োপ্যাক আছে ২২টি। এখানে অনেকেই এগুলো দিচ্ছেন। আমরাও কিছু কিনে নিচ্ছি।’

হাসপাতাল পরিচালক বলেন, ‘ঢাকায় এক জায়গায় রোগী পরিপূর্ণ হলে অন্যখানে যাচ্ছে। তবে আমাদের এখানে তেমন কোনো সুযোগ নেই। কোনো রোগীকে ফিরিয়ে দিলেই তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে হবে। সেজন্য আমরা সবাইকে সেবা দিচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সবাইকে সুস্থ করে তুলতে পারি।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

রাজশাহী মেডিকেল থেকে ৭৯ ভাগ করোনা রোগীই ফিরেছে সুস্থ হয়ে

আপডেট টাইম : ০৪:১৭:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অগাস্ট ২০২১

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো

 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত কয়েক মাস ধরেই মৃত্যুর ঘটনা থামছেই না। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা উপসর্গ নিয়ে। তবে এখানে সুস্থতার হারও একেবারে কম নয়। মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। রাজশাহী হাসপাতালের পরিসংখ্যান বলছে, করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রায় ৭৯ ভাগই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে।
রামেক হাসপাতালের তথ্যমতে, করোনা ইউনিটে এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৩১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ৩ হাজার ৭২৪ জন। মারা গেছে ১ হাজার ১০৩ জন। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়ে ৪৩৭, উপসর্গে ৬২৮ ও করোনা থেকে সুস্থ হয়ে পরবর্তী সমস্যায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা এখনো চিকিৎসাধীন।
এপ্রিল মাসে ৬৫৪ রোগী ভর্তি হয় এখানে। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছে ৫২০, মারা গেছে ৭৯ জন। এদের মধ্যে পজিটিভ ৩৬ ও উপসর্গে ৪৩ জন মারা গেছে।
মে মাসে ৮০৮ রোগী ভর্তি হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছে ৬১৭ জন। মৃত্যুবরণ করেছে ১২৪ জন। এদের মধ্যে পজিটিভ ৫৩, উপসর্গে ৭১ জন।

জুন মাসে ১ হাজার ৩৯১ রোগী ভর্তির পর সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছে ১ হাজার ৩ জন। মারা গেছে ৩৬৯, এদের মধ্যে পজিটিভ ১৬৮, উপসর্গে ১৯৪ ও করোনা-পরবর্তী সমস্যায় ৭ জনের মৃত্যু হয়।

জুলাই মাসে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আবার এ মাসে সুস্থতার হারও বেশি। এ মাসে করোনা ইউনিটে ১ হাজার ৮৭৮ জন রোগী ভর্তি হয়। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করে ৫৩১ জন। এর মধ্যে পজিটিভ ১৮০, উপসর্গে ৩২০ ও করোনা-পরবর্তী সমস্যায় ৩১ জন মারা যায়। ভয়ংকর মাস হিসেবে চিহ্নিত এই জুলাইয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ১ হাজার ৫৮৪ জন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘আমাদের এখানে চিকিৎসাধীন রোগীদের বড় একটি অংশকে আমরা সুস্থ করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এখানে নানান সীমাবদ্ধতা আছে। ডাক্তার ও নার্সের সংকট থাকলেও এখানে আধুনিক যন্ত্রপাতিও রয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি করোনা চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে যে যন্ত্রপাতি আছে অন্য মেডিকেল কলেজে এত নেই। এখানে অনেক বেশি আছে। আমরা চাহিদা পাঠালে কেউ বলেনি কেন লাগবে। তারা পাঠিয়ে দিয়েছে। আমাদের এখানে হাই ফ্লো ক্যানুলা আছে ৭২টি। বায়োপ্যাক আছে ২২টি। এখানে অনেকেই এগুলো দিচ্ছেন। আমরাও কিছু কিনে নিচ্ছি।’

হাসপাতাল পরিচালক বলেন, ‘ঢাকায় এক জায়গায় রোগী পরিপূর্ণ হলে অন্যখানে যাচ্ছে। তবে আমাদের এখানে তেমন কোনো সুযোগ নেই। কোনো রোগীকে ফিরিয়ে দিলেই তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে হবে। সেজন্য আমরা সবাইকে সেবা দিচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সবাইকে সুস্থ করে তুলতে পারি।’