ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো
বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক বিশাল অংশ নারী। সকল ক্ষেত্রে নারীর সমসুযোগ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা জাতীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করা একান্ত অপরিহার্য। বিশেষ করে আদিবাসি নারীরা গৃহস্থালী কাজের বাহিরেও কৃষি কাজে অগ্রদূত ভূমিকা রাখছেন। নারীরা সংসারকে মহিমান্বিত করে, কষ্টগাঁথা আমাদের সমাজের প্রতিটি স্তরে তাদের অবদান লক্ষ্যনীয়। বিশেষ করে কৃষি কাজে আদিবাসী নারীদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ । রাজশাহীর মোহনপুরসহ বরেন্দ্র অঞ্চল তানোর, গোদাগাড়ী, নাচোল ও নিয়ামতপুর, ধামইড়হাট, গোমস্তাপুর এবং মহাদেবপুর উপজেলায় এ এলাকায় কৃষি কাজে আদিবাসী নারীরা বেশি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। এই সকল আদিবাসি নারীরা অন্যের জমি কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে থাকেন। এই নারীরা পুরুষের সমপরিমান কাজ করলেও মজুরি বৈষম্যের শিকার হন তাঁরা।
আদিবাসী নারী শ্রমিকরা বলেন, আদিকাল হতে বংশ পরম্পরায় আমরা কৃষি কাজ করে আসছি। কৃষিকাজই তাদের প্রধান পেশা হিসেবে যুগ যুগ চলে আসছে। আমরা কৃষি উন্নয়নে অবদান ও ভালো কাজ করলেও পুরুষদের তুলনায় আমাদেরকে কম মজুরি দেন। একজন আদিবাসি পুরুষ শ্রমিক পান ৫০০ টাকা। নারী শ্রমিকরা পান ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার রায়ঘাটি আদিবাস পাড়ার নারী শ্রমিক ভারতী রানী বলেন, আমরা জমিতে ধান লাগানো, আগাছা পরিস্কার, ধান কাটা মাড়াই সকল কাজ পুরুষদের সমান করলেও মজুরি পায় কম।
মোহনপুর উপজেলার জামতলা আদিবাসিপাড়ার নারী শ্রমিক মায়া রানী জানা, পুরুষের পাশা-পাশি ধান কাটা মাড়াইসহ বিভিন্ন কৃষি কাজ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি। কিন্তু মজুরি দেয়ার সময় আমরা নারী বলে বৈষম্যে করা হয়।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ গোদাগাড়ী উপজেলা শাখার সভাপতি নন্দলাল টুডুর জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় আদিবাসি নারীরা পুরুষ শ্রমিকের সাথে সমান তালে কাজ করলেও মজুরির বেলায় প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রায় ১২ হাজারের বেশি আদিবাসি নারী শ্রমিক কৃষি কাজের সাথে জড়িত রয়েছেন।
আদিবাসি নারী নেত্রী সুষ্মিতা টুডু বলেন, এলাকার আদিবাসি নারী শ্রমিকরা কৃষিকাজে অভাবনীয় সাফল্য এনেছেন।
সম্মিলিত আদিবাসী নারী জোটের সভাপতি কল্পনা তির্কী বলেন, কৃষি কাজে আদিবাসি নারী শ্রমিকদের অবদান বেশি রয়েছে। তিনি জানান, আদিবাসী নারীদেরকে কৃষি শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানসহ নায্য মজুরি নিশ্চিত করার দাবী জানান।