ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো
রাজশাহী মহানগরীর দুটি দোকানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ টিসিবির পণ্য-সামগ্রী জব্দ করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বুধবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যা পর পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার মাস্টার পাড়া কাঁচাবাজারে অভিযান চালিয়ে বায়তুল আমান জামে মসজিদের নিচে দুটি মুদি দোকান সাগর ও সুমন ট্রেডার্সে অভিযান চালিয়ে টিসিবির ৫৫ কার্টুন তেল, তিন বস্তা চিনি ও আরও একটি জায়গায় ছয়বস্তা খোলা বোতলের তৈল উদ্ধার করা হয়। এসময় সাগর ও সমুন ট্রেডার্সের দুইজন সত্বাধিকারীকে আটক করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মহানগর গোয়েন্দা শাখার ডিবি ডিসি মো. জুয়েল আরেফিন।
তিনি জানান, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, কালোবাজারির উদ্দেশ্যে টিসিবির পণ্য মজুদ রাখা অবস্থায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে অভিযান চালিয়ে সাগর ও সুমন ট্রেডার্স নামে দুটি মুদি দোকান অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিপুল পরিমান টিসিবির তেল, চিনি ও খোলা বোতলের তেল উদ্ধার করাসহ দুই দোকানের মালিককে আটক করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন, নগরীর বোয়ালিয়া থানাধিন সাগর ট্রেডার্সের মালিক হেতেমখাঁ এলাকার মৃত সয়জুদ্দিন মিস্ত্রির ছেলে সাগর ও সুমন ট্রেডার্সের মালিক পাঁচানিমাঠ শেখেরচক এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে সুমন।
জানা যায় অভিযুক্ত সাগর ও সুমন দীর্ঘদিন থেকে টিসিবির মালামাল বিভিন্ন ভাবে দোকানে নিয়ে এসে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে আসছিলো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, এই দুই অভিযুক্ত ব্যক্তির সাথে টিসিবির মালামাল বিক্রেতাদের যোগসাজস রয়েছে। আরও জানা যায় টিসিবির মালামাল সর্বসাধারনের কাছে বিক্রির কথা থাকলেও তারা নয়ছয় করে কিছুু মালামাল সরিয়ে রেখে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করা হয়।
আরও জানা যায় এইসিন্ডিকেটের সাথে যারা জড়িত তারা তাদের লোকজনকে লাইনে দাঁড় করিয়ে প্রতিদিন টিসিবির ট্রাক থেকে মালামাল কিনিয়ে তাদের কাছে কমিশনের বিনিময়ে দোকানে নিয়ে সেগুলি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে। অভিযুক্ত সাগর ও সুমনকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ অভিযান চলাকালিন সময়ে আটক করে তাদের হেফাজতে নেয়। ওয়াকিবহাল মহল মনে করেন টিসিবির পণ্য বিক্রির তদারকি না থাকার ফলে ডিলাররা অবৈধভাবে প্রায় সময় জনগনকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন দোকানে নিয়ে বিক্রি করে।
এ বিষয়ে রাজশাহী ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির আঞ্চলিক কর্মকর্তা রবিউল মুর্শেদ বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। এর আগেও রাজশাহীতে এমন ঘটনা ঘটেছে। তখন ডিলারদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এসব ঘটনার সাথে ডিলাররা জড়িত। আমার চাই এইবার গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে পুরো রহস্য উদঘাটন করুক। কোন ডিলারের নাম পরিচয় পেলেই আমারা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, এ ঘটনায় বোয়ালিয়া থানায় মামলা হয়েছে। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে মাধ্যেমে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হবে।