ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

লকডাউন বাস্তবায়নে রাজশাহীতে কঠোর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো :

রাজশাহীতে দ্বিতীয় দিনেও ‘কঠোর লকডাউন’ বাস্তবাযনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল থেকে রাজশাহী শহরের প্রধান প্রধান সডক ও পাডা মহল্লার গলিপথেও টহল দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অন্য সময় সাপ্তাহিক বাজারের জন্য শুক্রবার কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড থাকলেও সকালে তা লক্ষ্য করা যায়নি। এখন পর্যন্ত শহর প্রায় ফাঁকাই রয়েছে।

তবে রাজশাহী মহানগর ও জেলায় জরুরি সেবাসমূহ চালু রয়েছে আগের মতোই। এর মধ্যে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, ওষুধ ও খাবার পরিবহনের যানবাহনগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই চলাচল করছে। যারা জরুরি প্রয়োজনে ওষুধের প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন তাদেরও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে।

পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার সদস্যদের পাশাপাশি রাজশাহী সিটি এবং প্রতিটি উপজেলায় সেনাবাহিনীর দুইটি করে টিম টহল দিচ্ছে। পাশাপাশি তিন প্লাটুন বিজিবি মাঠ পর্যায়ে ‘লকডাউন’ কার্যকরের দায়িত্ব পালন করছে। সর্বাত্মক লকডাউন শুরুর দ্বিতীয় দিনেও তাই রাজশাহী জুড়েই কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে রয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

রাজশাহী শহরের তিনটি প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। শহরের তিন দিকের প্রবেশমুখ আমচত্বর, কাশিয়াডাঙ্গা ও কাটাখালী এলাকায় পুলিশ সদস্যরা ব্যারিকেড দিয়ে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছেন। এসব পয়েন্ট মানুষ ও যানবাহনের অবাধ প্রবেশ ঠেকাতে নিñিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে মহানগর পুলিশ।
পণ্যবাহী পরিবহন, পিকআপ ভ্যান ও মালবাহী ট্রাক ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন রাজশাহী শহরে ঢুকতে বা বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। বেলা ১১টা পর্যন্ত জরুরি সেবার যানবাহন ছাড়া মূল সড়কে রিকশা চলতে দেখা যায়নি তবে পাড়া-মহল্লার ভেতরে ভেতরে রিকশা চলছে।

এছাড়া প্রাইভেটকারগুলো বিভিন্ন স্টিকার লাগিয়ে বাইরে বের হচ্ছে। বন্ধ রয়েছে শহরের সব মার্কেট, বিপণী বিতান এবং সব ধরনের দোকানপাট।
শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত রাজশাহী মহানগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বর, শিরোইল বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, নিউমার্কেট, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, সোনাদীঘির মোড়, লক্ষ্মীপুর কয়েকটি জনবহুল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তাঘাট একেবারেই মানুষ নেই। মূল সড়কে পিকআপ ভ্যান নিয়ে এবং পাড়া-মহল্লায় মোটরসাইকেল নিয়ে টহল দিচ্ছে পুলিশ।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক জানিয়েছেন, সরকারি প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বাত্মক ‘বিধিনিষেধ’ বা ‘লকডাউন’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ‘কঠোর লকডাউন’ বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ ও আনসার সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে। সিটি করপোরেশন ছাড়া উপজেলাগুলোতেও সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব টহল দিচ্ছে। এ অবস্থায় কেউ অহেতুক বাইরে ঘোরাঘুরি করলে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের শাস্তির মুখে পড়তে হবে।

বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাজশাহী জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইনে (দÐবিধি-১৮৬০, ২০১৮ সাল) ৫০ জনকে অর্থদÐ করা হয়েছে। পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৫০ জনের কাছ থেকে ৬৬ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তাই কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তিনি সবাইকে ঘরে থাকার আহবান জানান।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

লকডাউন বাস্তবায়নে রাজশাহীতে কঠোর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

আপডেট টাইম : ০৪:১৮:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুলাই ২০২১

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো :

রাজশাহীতে দ্বিতীয় দিনেও ‘কঠোর লকডাউন’ বাস্তবাযনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল থেকে রাজশাহী শহরের প্রধান প্রধান সডক ও পাডা মহল্লার গলিপথেও টহল দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অন্য সময় সাপ্তাহিক বাজারের জন্য শুক্রবার কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড থাকলেও সকালে তা লক্ষ্য করা যায়নি। এখন পর্যন্ত শহর প্রায় ফাঁকাই রয়েছে।

তবে রাজশাহী মহানগর ও জেলায় জরুরি সেবাসমূহ চালু রয়েছে আগের মতোই। এর মধ্যে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, ওষুধ ও খাবার পরিবহনের যানবাহনগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই চলাচল করছে। যারা জরুরি প্রয়োজনে ওষুধের প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন তাদেরও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে।

পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার সদস্যদের পাশাপাশি রাজশাহী সিটি এবং প্রতিটি উপজেলায় সেনাবাহিনীর দুইটি করে টিম টহল দিচ্ছে। পাশাপাশি তিন প্লাটুন বিজিবি মাঠ পর্যায়ে ‘লকডাউন’ কার্যকরের দায়িত্ব পালন করছে। সর্বাত্মক লকডাউন শুরুর দ্বিতীয় দিনেও তাই রাজশাহী জুড়েই কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে রয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

রাজশাহী শহরের তিনটি প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। শহরের তিন দিকের প্রবেশমুখ আমচত্বর, কাশিয়াডাঙ্গা ও কাটাখালী এলাকায় পুলিশ সদস্যরা ব্যারিকেড দিয়ে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছেন। এসব পয়েন্ট মানুষ ও যানবাহনের অবাধ প্রবেশ ঠেকাতে নিñিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে মহানগর পুলিশ।
পণ্যবাহী পরিবহন, পিকআপ ভ্যান ও মালবাহী ট্রাক ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন রাজশাহী শহরে ঢুকতে বা বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। বেলা ১১টা পর্যন্ত জরুরি সেবার যানবাহন ছাড়া মূল সড়কে রিকশা চলতে দেখা যায়নি তবে পাড়া-মহল্লার ভেতরে ভেতরে রিকশা চলছে।

এছাড়া প্রাইভেটকারগুলো বিভিন্ন স্টিকার লাগিয়ে বাইরে বের হচ্ছে। বন্ধ রয়েছে শহরের সব মার্কেট, বিপণী বিতান এবং সব ধরনের দোকানপাট।
শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত রাজশাহী মহানগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বর, শিরোইল বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, নিউমার্কেট, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, সোনাদীঘির মোড়, লক্ষ্মীপুর কয়েকটি জনবহুল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তাঘাট একেবারেই মানুষ নেই। মূল সড়কে পিকআপ ভ্যান নিয়ে এবং পাড়া-মহল্লায় মোটরসাইকেল নিয়ে টহল দিচ্ছে পুলিশ।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক জানিয়েছেন, সরকারি প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বাত্মক ‘বিধিনিষেধ’ বা ‘লকডাউন’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ‘কঠোর লকডাউন’ বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ ও আনসার সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে। সিটি করপোরেশন ছাড়া উপজেলাগুলোতেও সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব টহল দিচ্ছে। এ অবস্থায় কেউ অহেতুক বাইরে ঘোরাঘুরি করলে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের শাস্তির মুখে পড়তে হবে।

বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাজশাহী জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইনে (দÐবিধি-১৮৬০, ২০১৮ সাল) ৫০ জনকে অর্থদÐ করা হয়েছে। পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৫০ জনের কাছ থেকে ৬৬ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তাই কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তিনি সবাইকে ঘরে থাকার আহবান জানান।