ঢাকা ০৭:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

লকডাউনের প্রথম দিনে রাজশাহীতে সেনা ও বিজিবি কঠোর অবস্থানে

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো :

দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে সাতদিনের সরকারি ‘বিধি-নিষেধ বা কঠোর ‘লকডাউন’ শুরু হয়েছে। আর সেটি সফল করতে প্রথম দিনে প্রশাসনকে কঠোর অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও সেনা সদস্যদের পাশাপাশি বিজিবি, রাজশাহী জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল। এছাড়াও নগরীর ভেতরে ওষুধ ও কাঁচাবাজার ছাড়া ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। নগরীর অধিকাংশ এলাকা জনমানবশূন্য। মোড়ে মোড়ে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে। সেনাবাহিনী গাড়ি রাস্তায় দেখে গেছে। কোথাও কোথাও কয়েকজনকে দেখা গেলেও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে ঘরে যেতে বলছেন। তবে যারা একান্ত প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়েছেন তাদের আইডি কার্ড ও পরিচয়পত্র দেখে জিজ্ঞাসাবাদ সাপেক্ষে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের অনুমতি দিচ্ছেন।

এদিকে, রাজশাহী স্থানীয় প্রসাশন গত ১০ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত রাজশাহীতে করোনার উচ্চ সংক্রমন ও মৃত্যুর উর্দ্ধগতি ঠেকাতে টানা ২১ দিন লকডাউন পালন করা হয়। কিন্তু ওই সময় প্রসাশন নমনীয় থাকলেও এবার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ফলে ইজিবাইক, অটোরিকশা চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার দেখলেই থামাচ্ছেন তারা। জানতে চাচ্ছেন কেন বের হয়েছেন, কোথায় যাচ্ছেন? সদুত্তর না মিললে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে যারা এত বাধা বিপত্তি পরেও সড়কে গাড়ি বা সিএনজি, আটোরিকশা নিয়ে বের হওয়া অধিকাংশ মানুষই মেডিকেলের কারণ দেখাচ্ছেন। সত্যতা যাচাই করে সহজে ছাড়াও পাচ্ছেন তারা। কেউ কেউ মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: সামসুল আলম বলেন, লকডাউন যদি আমরা না মানি আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা বাডবে, আক্রান্তের সংখ্যা বাডবে। হাসপাতালে চিকিৎসা দিতেও মুশকিল হবে। কারণ সারা দেশে প্রতিদিনই করোনায় মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। এতে করে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। সরকার কেন কঠোর অবস্থানে গেল সেটি আমাদেরকে আগে বুঝতে হবে কারণ সাধারণ মানুষ চলমান বিধিনিষেধ আগে থেকে মানছিলেন না। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুও। এমন অবস্থায় সংক্রমণ কমানোর জন্য এক সপ্তাহ নই পরিপূর্ণভাবে অন্তত দুই সপ্তাহের কার্যকারী লকডাউন দিতে হবে।

অন্যদিকে, মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, জরুরি পরিষেবা ব্যতীত সবই বন্ধ আছে। আমরা কড়া লকডাউন বাস্তবায়ন করতে চাই। আমারা ছাড় দিচ্ছি শুধু জরুরি পণ্যবাহী, চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে শুধু যানবাহন চলাচল ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষদের। এবারে লকডাউনে জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে দেওয়া হবে না।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

লকডাউনের প্রথম দিনে রাজশাহীতে সেনা ও বিজিবি কঠোর অবস্থানে

আপডেট টাইম : ১১:৩৫:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই ২০২১

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না), রাজশাহী ব্যুরো :

দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে সাতদিনের সরকারি ‘বিধি-নিষেধ বা কঠোর ‘লকডাউন’ শুরু হয়েছে। আর সেটি সফল করতে প্রথম দিনে প্রশাসনকে কঠোর অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও সেনা সদস্যদের পাশাপাশি বিজিবি, রাজশাহী জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল। এছাড়াও নগরীর ভেতরে ওষুধ ও কাঁচাবাজার ছাড়া ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। নগরীর অধিকাংশ এলাকা জনমানবশূন্য। মোড়ে মোড়ে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে। সেনাবাহিনী গাড়ি রাস্তায় দেখে গেছে। কোথাও কোথাও কয়েকজনকে দেখা গেলেও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে ঘরে যেতে বলছেন। তবে যারা একান্ত প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়েছেন তাদের আইডি কার্ড ও পরিচয়পত্র দেখে জিজ্ঞাসাবাদ সাপেক্ষে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের অনুমতি দিচ্ছেন।

এদিকে, রাজশাহী স্থানীয় প্রসাশন গত ১০ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত রাজশাহীতে করোনার উচ্চ সংক্রমন ও মৃত্যুর উর্দ্ধগতি ঠেকাতে টানা ২১ দিন লকডাউন পালন করা হয়। কিন্তু ওই সময় প্রসাশন নমনীয় থাকলেও এবার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ফলে ইজিবাইক, অটোরিকশা চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার দেখলেই থামাচ্ছেন তারা। জানতে চাচ্ছেন কেন বের হয়েছেন, কোথায় যাচ্ছেন? সদুত্তর না মিললে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে যারা এত বাধা বিপত্তি পরেও সড়কে গাড়ি বা সিএনজি, আটোরিকশা নিয়ে বের হওয়া অধিকাংশ মানুষই মেডিকেলের কারণ দেখাচ্ছেন। সত্যতা যাচাই করে সহজে ছাড়াও পাচ্ছেন তারা। কেউ কেউ মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: সামসুল আলম বলেন, লকডাউন যদি আমরা না মানি আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা বাডবে, আক্রান্তের সংখ্যা বাডবে। হাসপাতালে চিকিৎসা দিতেও মুশকিল হবে। কারণ সারা দেশে প্রতিদিনই করোনায় মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। এতে করে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। সরকার কেন কঠোর অবস্থানে গেল সেটি আমাদেরকে আগে বুঝতে হবে কারণ সাধারণ মানুষ চলমান বিধিনিষেধ আগে থেকে মানছিলেন না। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুও। এমন অবস্থায় সংক্রমণ কমানোর জন্য এক সপ্তাহ নই পরিপূর্ণভাবে অন্তত দুই সপ্তাহের কার্যকারী লকডাউন দিতে হবে।

অন্যদিকে, মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, জরুরি পরিষেবা ব্যতীত সবই বন্ধ আছে। আমরা কড়া লকডাউন বাস্তবায়ন করতে চাই। আমারা ছাড় দিচ্ছি শুধু জরুরি পণ্যবাহী, চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে শুধু যানবাহন চলাচল ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষদের। এবারে লকডাউনে জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে দেওয়া হবে না।