জেলা প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় চারজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬৭ জনের।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই চারজনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে একসঙ্গে চারজনের মৃত্যু এটাই প্রথম।
আজ সকাল সাড়ে এগোরাটার সময় হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও দুজন নারী। এই প্রথম কুষ্টিয়ায় একদিনে সর্বোচ্চ করোনায় মৃত্যু চার জন। তিনি আরো বলেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স না থাকলেও এদিক–সেদিক করে চালানো হচ্ছে। তবে অবকাঠামোর খুবই অভাব। চিকিৎসা সরঞ্জাম যা আছে, তাতে আপাতত চলবে। হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা যা আছে, তা সীমিত। আরও ১৫ থেকে ২০টি এ মুহূর্তে সরবরাহ করা হলে ভালো হতো।
গতকাল রাত ১০টায় জেলা প্রশাসন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এক দিনে সর্বোচ্চ ৬৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২২২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে চলতি বছরে এটাই সর্বোচ্চ শনাক্ত। তাঁদের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলাতেই ৪৩ জন রয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৩ দিনে ৬৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে জেলায় ১৭৩ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের বেশি। গত ৭ দিনে শনাক্ত হয়েছেন ৩১৩ জন। এ সময়ে মারা গেছেন ১১ জন।
হাসপাতালটির মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবির বলেন, করোনা রোগী ভর্তির চাপ ব্যাপক। এ জন্য দুটির বাইরে আরও একটি ৩৬ শয্যার ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে। আজ বুধবার নতুন ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি শুরু করা হবে।
এর আগে গত বৃহপতিবার (৩মে) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেছিলেন, কুষ্টিয়ায় এখন করোনা রোগী বাড়ার হার ঊর্ধ্বমুখী। এই মুহূর্তে লকডাউনের কোনো বিকল্প নেই। সেটা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে হাসপাতালে রোগীর চাপ সামলানো যাবে না। যে হারে করোনা পজিটিভের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে মানুষকে অন্তত এক থেকে দুই সপ্তাহ কঠোরভাবে ঘরে রাখতে হবে। তাহলে করোনার ঊর্ধ্বমুখী হার ঠেকানো সম্ভব।
সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম আজ দুপুরে মুঠো ফোনে বলেন, এই মূহুর্তে কুষ্টিয়ায় লকডাউন ছাড়া পরিস্থিতি কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়।