মো: রেজাউল ইসলামরামপাল (বাগেরহাট)
ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ¡াসে রামপালে বিভিন্ন সেক্টর মিলে মোট ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে মৎস্য সেক্টরে। এরপরেই ক্ষতি হয়েছে সড়ক ও যোগাযোগ সেক্টরে। এছাড়া প্রাণীসম্পদ বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সহ বিভিন্ন সেক্টরে ও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপকূলীয় এলাকা গুলো প্রতিরক্ষা বাঁধের আওতায় আনা গেলে এ ক্ষতি অনেক কম হত বলে স্থানীয় জনসাধারন মনে করেন। মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল সংলগ্ন খাল খননের মাটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সহজইে উপজেলার অনেক এলাকা গুলো প্রতিরক্ষা বাঁধের আওতায় আনা সম্ভব বলে ও তারা বিশ্বাস করেন।
রামপাল উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস এবং উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে যে, ইয়াসের ফলে সৃষ্ট জলোচ্ছ¡াসে রামপালে মৎস্য, প্রানী, সড়ক (কাঁচা ও পাকা), ল্যাট্রিন, ঘর-বাড়ী, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নলকুপ (গভীর ও অগভীর) , সীমানা প্রাচীর সহ নানা সেক্টরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে মোট ক্ষতি হয়েছে ৬ কোটি ৮৯ লক্ষ ৬৭ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়া উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন ৪টি কার্পেটিং রাস্তার আংশিক নষ্ট হয়ে আরো ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি টাকার। এ হিসেবে মোট ক্ষতি হয়েছে ৭ কোটি ৮৯ লক্ষ ৬৭ হাজার ৩০৪ টাকার। তবে প্রকৃত ক্ষতির পরিমান আরো অনেক বেশী বলে মনে করেন স্থানীয় জনগন ।
রামপালে ইয়াসে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে মৎস্য সেক্টর। ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ¡াসে প্লাবিত হয়ে ২৭৮১ টি মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ৫কোটি ২৪ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার। এছাড়া পানি কবলিত এলাকায় প্রায় প্রত্যেকের ব্যাক্তি গত পুকুর ছিল যা তাদের দৈনন্দিন আমিষের একটি বড় চাহিদা পুরন করত। জোয়ারের তীব্র লবনাক্ত পানি মিঠা পানির এ পুকুর গুলোতে প্রবেশ করায় হাজারও পুকুরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে গেছে । এ ক্ষতি মৎস্য অধিদপ্তরের পরিসংখনে এখন ও আসেনি। পুকুরে সংরক্ষিত মাছের এ ক্ষতি যুক্ত হলে মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমান আরো বেড়ে যেতে পারে। উপজেলার কাশিপুর গ্রামের এসকেন্দার জানান যে, তার পুকুরে রুই, কাতলা সহ বিভিন্ন কার্প জাতীয় প্রায় ৪ থেকে ৫ মন মাছ ছিল। এ সমস্ত মাছ জোয়ারের পানিত ভেসে গেছে এবং বাকী মাছ লবন পানি প্রবেশের কারনে মরে গেছে। এতে তার প্রায় ৪০হাজার থেকে ৫০হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এসকেন্দারের মত উপজেলার হাজারও মানুষের একই অবস্থা।
ক্ষতির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সড়ক ও যোগাযোগ সেক্টর। ইয়াসে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইটের সোলিং রাস্তার আংশিক নষ্ট হয়েছে ৪০ কি.মি. যাতে আনুমানিক ক্ষতি হয়েছে ৭৫ লক্ষ টাকার ও কাঁচা রাস্তার ক্ষতি হয়েছে ৪০ কি.মি. যাতে আনুমানিক ৪৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে । এছাড়া ১৫শত ল্যাট্রিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যাতে আনুমানিক ৩৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে । কাঁচা ঘরবাড়ী আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি যাতে ক্ষতির পরিমান ৯৫হাজার টাকা এবং ২টি বাড়ী সম্পূর্ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যাতে ৮০হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ২টি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যাতে ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ১ লক্ষ টাকা। ১৫টি গভীর নলকুপ ও ৮টি অগভীর নলকুপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যাতে মোট ক্ষতি হয়েছে ৪২ হাজার টাকা।