আলোর জগত ডেস্কঃ দুর্নীতিবাজদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, আপনি যত বড় নেতা, কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী বা ঠিকাদার হোন না কেন, অনিয়ম-দুর্নীতি করে পার পাবেন না। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযান অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে।
বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার এরই মধ্যে সমাজ থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করতে অভিযান শুরু করেছে। আমি আশা করি, এ অভিযান দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখবে এবং অবকাঠামোসহ উন্নয়নের সব ক্ষেত্রে গুণগতমান নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে।
আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে পা রেখেছে। আমরা ২০ তলা ভবন মাত্র ১৩ মাসের মধ্যে নির্মাণ করার সক্ষমতা অর্জন করেছি। কিছু অসাধু লোকের জন্য জাতির এ অর্জন ম্লান হতে পারে না।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের অপকীর্তি ও অনিয়ম গণমাধ্যমে প্রায়ই সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে। কোনো কোনো সময় এসব সংবাদ ‘টক অব দ্য সিটি’ বা ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়। অনেক সময় ভবনের কাজ শেষ না হতেই ভবনে ফাটল দেখা দেয় বা পলেস্তারা খসে পড়ে। এতে সরকারি কাজের মান নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দেয় এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দায় সরকার নেবে না বরং তাদেরই এর দায় নিতে হবে।
আবদুল হামিদ বলেন, প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি কাজের জন্য কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে প্রকল্পে কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি হলে তাৎক্ষণিকভাবে চিহ্নিত করা যায় এবং দায়ী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনা যায়। কাজের প্রতিটি স্তরে সঠিকভাবে তদারকি হলে রডের পরিবর্তে বাঁশ আর সিমেন্টের বদলে বালি ব্যবহারের গল্প শুনতে হবে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা জানি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠান নয়। তবে ব্যবসার নামে প্রতারণা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কাজ না করে বা আংশিক কাজ করে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অশুভ আঁতাত করে বিল নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। অহেতুক বিলম্ব করে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ফায়দা লুটবেন- এ ধরনের মনমানসিকতা পরিহার করতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব শহীদ উলল্গা খন্দকার বক্তব্য দেন।