আলোর জগত ডেস্ক : আসামের নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়া ব্যক্তিরা বাংলাদেশি বলে মনে করেন না পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। গতকাল শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আরো পড়ুন : পবিত্র আশুরা ১০ সেপ্টেম্বর
নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ যাওয়া ব্যক্তিদের অনেককে বাংলাদেশি হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে উল্লেখ করে সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি এমনটা মনে করি না। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর আমাকে বলেছেন যে, এটা পুরোপুরিই তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তার কোনো কারণ নেই। তিনি এও বলেছেন, ‘কোনোভাবেই বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়বে না’।
বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাওয়া মানুষেরা এখন কোথায়?- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আব্দুল মোমেন বলেন, যদি সেখানে কোনো বাংলাদেশি থেকেও থাকেন, তবে তারা হয়তো ১৯৪৭ এর (দেশভাগ) আগে অথবা ১৯৭১ এর (মুক্তিযুদ্ধ) আগে (বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে) গিয়েছেন। অর্থাৎ তারা সেখানে বহুবছর ধরে থাকছেন। সুতরাং আমরা মনে করি না তারা বাংলাদেশি।
তিনি আরো বলেন, এমন কোনো কারণ নেই যে একজন বাংলাদেশি ভারতে চলে যাবেন। দেখেন ভোল্টেজ ডাইনামিক পৃথিবীতে বিভিন্ন ঘটনা ঘটবে, অ্যান্ড উই উইল ম্যানেজ ইট। বাংলাদেশ সবদিকে ভালো আছে, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। আমরা দেখি না যে কোনো বাংলাদেশির ভারতে যাওয়ার আগ্রহ আছে। বাংলাদেশে জীবনযাত্রায় ব্যয়ের চেয়ে মাথাপিছু আয়ও তুলনামূলক বেশ ভালো। আমাদের এইখানে এখন বেকার সমস্যা নেই, তাই আমাদের দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
‘আর এনআরসি তালিকাটা কীসের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে সে বিষয়টিও আমি বুঝতে পারছি না’- বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, শনিবার আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে তালিকায় স্থান পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ নাগরিক। অর্থাৎ প্রায় ১৯ লাখ বসবাসকারী চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। তারা আগামী ১২০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ পাবেন। তালিকায় নাম না থাকা আসামে বসবাসরতদের জন্য এখন কি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে উৎকণ্ঠা। তবে আসামের পুলিশ বিবৃতিতে সবাইকে অনুরোধ করেছে যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও গুজব থেকে দূরে থাকার জন্য।