ঢাকা ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

রাশিয়ায় রকেট ইঞ্জিন বিস্ফোরণ, নিহত ৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  রাশিয়ায় নৌবাহিনীর একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে রকেট ইঞ্জিন বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো তিনজন। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক প্রতিষ্ঠান রোসাটম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ রাশিয়ার নিয়নসকায় একটি রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।

আরো পড়ুন :  পটুয়াখালীতে ৩০ মামলার আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

বিস্ফোরণে আহত তিনজন গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোসাটম কর্তৃপক্ষ। এর আগে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, বিস্ফোরণে দুজন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে।

রাশিয়ার গণমাধ্যমকে রোসাটম জানায়, ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে তরল রকেট ইঞ্জিনের চালিকাশক্তি হিসেবে ‘আইসোটপ শক্তি উৎস’ নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছিল প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ও কারিগরি দল। এ পরীক্ষার সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

সমুদ্র থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল, ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রসহ রাশিয়ার নৌবাহিনীর সব ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার পরীক্ষা চালানো হয় নিয়নসকা কেন্দ্রে।

রোসাটম কর্তৃপক্ষ জানায়, গত বৃহস্পতিবার  নিয়নসকা থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার পূর্বে সেভেরদ্ভিন্সক এলাকায় এই রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষা চালানো হচ্ছিল। এ সময় হঠাৎ করেই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের কিছু সময়ের মধ্যেই প্রায় ৪০ মিনিটের জন্য ওই এলাকায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। তবে ৪০ মিনিট পরই তা আবার স্বাভাবিক মাত্রায় নেমে আসে।

জানা যায়, বিস্ফোরণের পরপরই তেজস্ক্রিয়তা থেকে রক্ষা পেতে মেডিকেল আয়োডিন কিনতে ছোটেন আরখানগেলস্ক ও সেভেরদ্ভিন্সক অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা। এর ফলে ওই অঞ্চলের ফার্মেসিগুলোতে আয়োডিনের সংকট দেখা দিয়েছে।

এর আগে আরখানগেলস্কের একটি নিউজপোর্টালে স্থানীয় বাসিন্দাদের আয়োডিন কেনার খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

নিউজপোর্টালটি আরো জানিয়েছিল, রাসায়নিক ও পারমাণবিক সুরক্ষা পোশাক পরে নিয়নসকা পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে আহতদের উদ্ধার করেন উদ্ধারকর্মীরা।

এর আগে ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনে চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার সময় আয়োডিনের মজুদের ঘটনা দেখা গিয়েছিল।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়নসকা নৌবাহিনীর পরীক্ষাকেন্দ্রে রকেট ইঞ্জিন বিস্ফোরণের পর ৪০ মিনিট ধরে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার জানায় সেভেরদ্ভিন্সক প্রশাসন। কিন্তু কিছু সময় পরে অনলাইন থেকে সে তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘এর কারণ, বিস্ফোরণটি ঘটেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে।’

অন্যদিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশের পরিবেশে কোনো ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক বা তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়নি।

এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সংশ্লিষ্টতায় দ্বিতীয়বারের মতো এমন দুর্ঘটনা ঘটল। গত সোমবার সাইবেরিয়ায় একটি অস্ত্রভাণ্ডারে আগুন লেগে একজন নিহত ও আটজন আহত হন। এ ছাড়া অস্ত্রের গুদাম থেকে উড়ে আসা অগ্নিপিণ্ডে পুড়ে যায় একটি স্কুল ও একটি কিন্ডারগার্টেন। এ ঘটনার পর নয় হাজারের বেশি মানুষকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

রাশিয়ায় রকেট ইঞ্জিন বিস্ফোরণ, নিহত ৫

আপডেট টাইম : ০২:৫৩:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ অগাস্ট ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  রাশিয়ায় নৌবাহিনীর একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে রকেট ইঞ্জিন বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো তিনজন। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক প্রতিষ্ঠান রোসাটম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ রাশিয়ার নিয়নসকায় একটি রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।

আরো পড়ুন :  পটুয়াখালীতে ৩০ মামলার আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

বিস্ফোরণে আহত তিনজন গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোসাটম কর্তৃপক্ষ। এর আগে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, বিস্ফোরণে দুজন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে।

রাশিয়ার গণমাধ্যমকে রোসাটম জানায়, ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে তরল রকেট ইঞ্জিনের চালিকাশক্তি হিসেবে ‘আইসোটপ শক্তি উৎস’ নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছিল প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ও কারিগরি দল। এ পরীক্ষার সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

সমুদ্র থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল, ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রসহ রাশিয়ার নৌবাহিনীর সব ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার পরীক্ষা চালানো হয় নিয়নসকা কেন্দ্রে।

রোসাটম কর্তৃপক্ষ জানায়, গত বৃহস্পতিবার  নিয়নসকা থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার পূর্বে সেভেরদ্ভিন্সক এলাকায় এই রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষা চালানো হচ্ছিল। এ সময় হঠাৎ করেই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের কিছু সময়ের মধ্যেই প্রায় ৪০ মিনিটের জন্য ওই এলাকায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। তবে ৪০ মিনিট পরই তা আবার স্বাভাবিক মাত্রায় নেমে আসে।

জানা যায়, বিস্ফোরণের পরপরই তেজস্ক্রিয়তা থেকে রক্ষা পেতে মেডিকেল আয়োডিন কিনতে ছোটেন আরখানগেলস্ক ও সেভেরদ্ভিন্সক অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা। এর ফলে ওই অঞ্চলের ফার্মেসিগুলোতে আয়োডিনের সংকট দেখা দিয়েছে।

এর আগে আরখানগেলস্কের একটি নিউজপোর্টালে স্থানীয় বাসিন্দাদের আয়োডিন কেনার খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

নিউজপোর্টালটি আরো জানিয়েছিল, রাসায়নিক ও পারমাণবিক সুরক্ষা পোশাক পরে নিয়নসকা পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে আহতদের উদ্ধার করেন উদ্ধারকর্মীরা।

এর আগে ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনে চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার সময় আয়োডিনের মজুদের ঘটনা দেখা গিয়েছিল।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়নসকা নৌবাহিনীর পরীক্ষাকেন্দ্রে রকেট ইঞ্জিন বিস্ফোরণের পর ৪০ মিনিট ধরে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার জানায় সেভেরদ্ভিন্সক প্রশাসন। কিন্তু কিছু সময় পরে অনলাইন থেকে সে তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘এর কারণ, বিস্ফোরণটি ঘটেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে।’

অন্যদিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশের পরিবেশে কোনো ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক বা তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়নি।

এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সংশ্লিষ্টতায় দ্বিতীয়বারের মতো এমন দুর্ঘটনা ঘটল। গত সোমবার সাইবেরিয়ায় একটি অস্ত্রভাণ্ডারে আগুন লেগে একজন নিহত ও আটজন আহত হন। এ ছাড়া অস্ত্রের গুদাম থেকে উড়ে আসা অগ্নিপিণ্ডে পুড়ে যায় একটি স্কুল ও একটি কিন্ডারগার্টেন। এ ঘটনার পর নয় হাজারের বেশি মানুষকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।