ঢাকা ০৭:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ইংল্যান্ডের বিশ্বজয়ে ক্রিকেট রোমাঞ্চ

স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতলো ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড। বছরের পর বছর ধরেই ইংলিশদের জন্য বিশ্বকাপ ছিল আরাধ্য স্বপ্ন। এই একটি ট্রফির জন্যই চাতক পাখির মতো পলকহীন চোখে চেয়েছিল থ্রি লায়ন্সরা। ১৯৭৯, ৮৭, ও ৯২ সালে তিন বার ফাইনালে উঠেও ছুঁতে পারেনি স্বর্ণালী ট্রফিটি। মরগানের হাত ধরে ধরা দিল সেই আরাধ্য ট্রফি।

আরো পড়ুন :  ডেঙ্গু মশা নির্মূলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ

লর্ডসের ফাইনালে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড দলপতি কেন উইলিয়ামসন। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে কিউইরা তোলে ২৪১ রান। দুই দলের জন্য ছিল প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা বুঝে নেওয়ার সুযোগ। ইংলিশরা ৫০ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৪১ রান। ম্যাচ টাই হলে সুপার ওভারে গড়ায় ফাইনালের ভাগ্য।

সুপার ওভারে আগে ব্যাটিং করে বিনা উইকেটে ১৫ রান তুলেছেন জস বাটলার ও বেন স্টোকস। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের চাই ১৬ রান। এই রান টার্গেটে আর্চারের মোকাবেলা করতে নেমেছে জিমি নিশাম ও গাপটিল। ইংল্যান্ডের পক্ষে বল হাতে আসেন জোফরা আর্চার। সে ওভারের ৫ বলেই ১৩ রান করে ফেলেন নিশাম। শেষ বলে ১ রান নিতে সক্ষম হন গাপটিল। ফলে টাই হয় সুপার ওভারও। কিন্তু মূল ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোয় প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড।

ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই হিমশিম খাচ্ছিল গাপটিল-নিকোলাস জুটি। একসময় ওকসের বলে এলবির শিকার হলেন নিকোলাস। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন কিউই এই ওপেনার। তবে এই জুটিকে বড় করতে পারেনি কিউইরা। দলীয় ২৯ রানে মার্টিন গাপটিলকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন ক্রিস ওকস। ডানহাতি এই পেসারের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি। ১৮ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ১৯ রান করেন গাপটিল।

গত বিশ্বকাপের সেরা পারফরমার ছিলেন মার্টিন গাপটিল। অথচ এই বিশ্বকাপে অচেনা এক গাপটিলকেই দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। ১১ ম্যাচ খেললেও চেনা রুপে ফিরতে পারেননি বিধ্বংসী এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। এই বিশ্বকাপে ১১ ম্যাচে তার মোট রান ১৮৬।

গাপটিলকে হারিয়ে চাপ সামলিয়ে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলছিল নিউজিল্যান্ড। ৭৪ রানের জুটি এসেছে উইলিয়ামসন-নিকোলাসের ব্যাটে । দলীয় ১০৩ রানে প্লাঙ্কেটের বলে এডজ হয় উইলিয়ামসনের। যেটি তালুবন্দী করেন ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক বাটলার। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিওতে দেখা যায় উইলিয়ামসনের ব্যাটের কোনায় হালকা স্পর্শ করে বাটলারের কাছে পৌছে। এতে ৩০ রানেই সাজঘরে ফিরতে হলে কিউই অধিনায়ককে।

উইলিয়ামসনকে হারানোর ধাক্কা সামলানোর আগেই নিউজিল্যান্ড হারালো ওপেনার নিকোলাসকে। দারুণ খেলতে থাকা নিকোলাস বোল্ড হয়ে ফিরলেন প্লাঙ্কেটের বলে। ৭৭ বলে ৫৫ রান তুলেছেন তিনি।

৩৪তম ওভারে মার্ক উডের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন রস টেইলর। ৩১ বলে ১৫ রান করেছেন তিনি। ২৫ বলে তিন বাউন্ডারিতে ১৯ রান করে ফেরেন অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। কলিন ডি গ্রান্ডহোম (১৬) দলকে বেশিদূর নিতে পারেননি। ৪৯তম ওভারে বিদায় নেওয়ার আগে টম ল্যাথাম করেন ৪৭ রান। তার ৫৬ বলে সাজানো ইনিংসে ছিল দুটি চার, একটি ছয়। শেষ ওভারে আর্চারের বলে বোল্ড হন হেনরি (৪)। এতে দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৪২ রানে।

ইংলিশ বোলারদের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়ে সবচেয়ে সফল দুই বোলার ক্রিস ওকস ও লিয়াম প্লাঙ্কেট। হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন ও জিমি নিশামের উইকেট তুলে নিয়ে কিউই ইনিংসের মূল ক্ষতিটা করে দিয়েছিলেন তিনিই। ১০ ওভার বল করে ৪২ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন প্লাঙ্কেট। ক্রিস ওকস ৯ ওভারে ৩৭ রান খরচায় তুলে নেন তিনটি উইকেট। মার্ক উড ১০ ওভারে ৪৯ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। বেন স্টোকস ৩ ওভারে ২০ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। ৮ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন স্পিনার আদিল রশিদ। জোফরা আর্চার ১০ ওভারে ৪২ রান দিয়ে একটি উইকেট পান।

২৪২ রানের মাঝারি লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ২৮ রানে ফিরলেন জেসন রয়। ম্যাট হেনরির বলে টম লাথামের হাতে ধরা পড়ার আগে ২০ বল থেকে ১৭ রান করেন তিনি। বিশ্বকাপের সব ম্যাচেই ইংল্যান্ডের দারুণ শুরুর ভিত গড়ে দিয়েছেন রয়। কিন্তু ফাইনালে হাসেনি রয়ের ব্যাট।

কিউই পেসারদের তোপে সুবিধা করতে পারছিলেন না রুট। শেষ পর্যন্ত ৩০ বলে মাত্র ৭ রান করে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। দলীয় ৭১ রানে লকি ফার্গুসনের শিকারে পরিণত হন ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। ইনসাইড এজ থেকে এই ম্যাচে অন্তত তিন বার বেঁচে গিয়েছিলেন। ৫৫ বলে ৭টি চারে ৩৬ করে তিনি বোল্ড হন।

দলীয় ৮৬ রানে জেমস নিশামের বলে তুলে মারতে গিয়ে ফার্গুসনের তালুবন্দি হন ইংলিশ অধিনায়ক। এতে আরো বিপদে পড়েছিল ইংল্যান্ড। ২২ বলে ৯ রান করেন তিনি।

বিপর্যয় কাটিয়ে ইংল্যান্ডকে শিরোপা জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন বেন স্টোকস ও জস বাটলার। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তারা ১১০ রান তোলেন। তবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২০তম হাফসেঞ্চুরি তুলে লকি ফার্গুসনের দ্বিতীয় শিকারে মাঠ ছাড়েন বাটলার (৫৯)। ৬০ বলে ৬টি চারের সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান তিনি। দলীয় ২০৩ রানে সেই ফার্গুসনের শিকার হন ক্রিস ওকস। ৪ বলে ২ রান তার।

৪৯তম ওভারে জিমি নিশামের বলে বোল্টের ক্যাচ হয়ে ফিরলেন প্লাঙ্কেট (১০)। স্কোরকার্ডে ৭ রান যোগ হতেই আর্চারকে (০) বোল্ড করে ফেরালেন নিশাম।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৫ রান। বেন স্টোকস প্রথম দুই বলে রান পাননি। তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকান। চতুর্থ বলে ডাবল রান নেওয়ার পথে স্টোকসের ব্যাটে লেগে অতিরিক্ত আরও চার রান আসে। পঞ্চম বলে রানআউট হন আদিল রশিদ। শেষ বলে দরকার হয় ২ রানের। ডাবল রান নেওয়ার পথে রানআউট হন মার্ক উড। ম্যাচ টাই হলে গড়ায় সুপার ওভারে। বেন স্টোকস ৯৮ বলে ৫ চার আর ২ ছক্কায় ৮৪ রান করে অপরাজিত থাকেন।

দৌড়ে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হন উড। তবে সমতায় স্কোর শেষ করায় সুপার ওভারে গড়ায় ফাইনাল। ৫০ ওভারে ২৪১ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা।

সুপার ওভারে আগে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। বোল্টের ওভারে স্টোকস ও বাটলারের ব্যাটে ১৫ রান করে তারা। স্টোকস ও বাটলার একটি করে বাউন্ডারি মারেন। লক্ষ্যে নেমে জোফরা আর্চারের প্রথম দুই বলেই আসে ৯ রান। প্রথম বল ওয়াইডের পর নিশাম ৬ মারেন। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে ২টি করে রান নেন নিশাম। তাতে শেষ ২ বলে ৩ রান দরকার ছিল কিউইদের। আর শেষ বলে লক্ষ্য ছিল ২ রানের। মার্টিন গাপটিল দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হন। এতে টাই হয় সুপার ওভারও। কিন্তু মূল ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোয় প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

ইংল্যান্ডের বিশ্বজয়ে ক্রিকেট রোমাঞ্চ

আপডেট টাইম : ০১:৪৫:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০১৯

স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতলো ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড। বছরের পর বছর ধরেই ইংলিশদের জন্য বিশ্বকাপ ছিল আরাধ্য স্বপ্ন। এই একটি ট্রফির জন্যই চাতক পাখির মতো পলকহীন চোখে চেয়েছিল থ্রি লায়ন্সরা। ১৯৭৯, ৮৭, ও ৯২ সালে তিন বার ফাইনালে উঠেও ছুঁতে পারেনি স্বর্ণালী ট্রফিটি। মরগানের হাত ধরে ধরা দিল সেই আরাধ্য ট্রফি।

আরো পড়ুন :  ডেঙ্গু মশা নির্মূলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ

লর্ডসের ফাইনালে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড দলপতি কেন উইলিয়ামসন। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে কিউইরা তোলে ২৪১ রান। দুই দলের জন্য ছিল প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা বুঝে নেওয়ার সুযোগ। ইংলিশরা ৫০ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৪১ রান। ম্যাচ টাই হলে সুপার ওভারে গড়ায় ফাইনালের ভাগ্য।

সুপার ওভারে আগে ব্যাটিং করে বিনা উইকেটে ১৫ রান তুলেছেন জস বাটলার ও বেন স্টোকস। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের চাই ১৬ রান। এই রান টার্গেটে আর্চারের মোকাবেলা করতে নেমেছে জিমি নিশাম ও গাপটিল। ইংল্যান্ডের পক্ষে বল হাতে আসেন জোফরা আর্চার। সে ওভারের ৫ বলেই ১৩ রান করে ফেলেন নিশাম। শেষ বলে ১ রান নিতে সক্ষম হন গাপটিল। ফলে টাই হয় সুপার ওভারও। কিন্তু মূল ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোয় প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড।

ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই হিমশিম খাচ্ছিল গাপটিল-নিকোলাস জুটি। একসময় ওকসের বলে এলবির শিকার হলেন নিকোলাস। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন কিউই এই ওপেনার। তবে এই জুটিকে বড় করতে পারেনি কিউইরা। দলীয় ২৯ রানে মার্টিন গাপটিলকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন ক্রিস ওকস। ডানহাতি এই পেসারের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি। ১৮ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ১৯ রান করেন গাপটিল।

গত বিশ্বকাপের সেরা পারফরমার ছিলেন মার্টিন গাপটিল। অথচ এই বিশ্বকাপে অচেনা এক গাপটিলকেই দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। ১১ ম্যাচ খেললেও চেনা রুপে ফিরতে পারেননি বিধ্বংসী এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। এই বিশ্বকাপে ১১ ম্যাচে তার মোট রান ১৮৬।

গাপটিলকে হারিয়ে চাপ সামলিয়ে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলছিল নিউজিল্যান্ড। ৭৪ রানের জুটি এসেছে উইলিয়ামসন-নিকোলাসের ব্যাটে । দলীয় ১০৩ রানে প্লাঙ্কেটের বলে এডজ হয় উইলিয়ামসনের। যেটি তালুবন্দী করেন ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক বাটলার। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিওতে দেখা যায় উইলিয়ামসনের ব্যাটের কোনায় হালকা স্পর্শ করে বাটলারের কাছে পৌছে। এতে ৩০ রানেই সাজঘরে ফিরতে হলে কিউই অধিনায়ককে।

উইলিয়ামসনকে হারানোর ধাক্কা সামলানোর আগেই নিউজিল্যান্ড হারালো ওপেনার নিকোলাসকে। দারুণ খেলতে থাকা নিকোলাস বোল্ড হয়ে ফিরলেন প্লাঙ্কেটের বলে। ৭৭ বলে ৫৫ রান তুলেছেন তিনি।

৩৪তম ওভারে মার্ক উডের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন রস টেইলর। ৩১ বলে ১৫ রান করেছেন তিনি। ২৫ বলে তিন বাউন্ডারিতে ১৯ রান করে ফেরেন অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। কলিন ডি গ্রান্ডহোম (১৬) দলকে বেশিদূর নিতে পারেননি। ৪৯তম ওভারে বিদায় নেওয়ার আগে টম ল্যাথাম করেন ৪৭ রান। তার ৫৬ বলে সাজানো ইনিংসে ছিল দুটি চার, একটি ছয়। শেষ ওভারে আর্চারের বলে বোল্ড হন হেনরি (৪)। এতে দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৪২ রানে।

ইংলিশ বোলারদের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়ে সবচেয়ে সফল দুই বোলার ক্রিস ওকস ও লিয়াম প্লাঙ্কেট। হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন ও জিমি নিশামের উইকেট তুলে নিয়ে কিউই ইনিংসের মূল ক্ষতিটা করে দিয়েছিলেন তিনিই। ১০ ওভার বল করে ৪২ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন প্লাঙ্কেট। ক্রিস ওকস ৯ ওভারে ৩৭ রান খরচায় তুলে নেন তিনটি উইকেট। মার্ক উড ১০ ওভারে ৪৯ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। বেন স্টোকস ৩ ওভারে ২০ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। ৮ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন স্পিনার আদিল রশিদ। জোফরা আর্চার ১০ ওভারে ৪২ রান দিয়ে একটি উইকেট পান।

২৪২ রানের মাঝারি লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ২৮ রানে ফিরলেন জেসন রয়। ম্যাট হেনরির বলে টম লাথামের হাতে ধরা পড়ার আগে ২০ বল থেকে ১৭ রান করেন তিনি। বিশ্বকাপের সব ম্যাচেই ইংল্যান্ডের দারুণ শুরুর ভিত গড়ে দিয়েছেন রয়। কিন্তু ফাইনালে হাসেনি রয়ের ব্যাট।

কিউই পেসারদের তোপে সুবিধা করতে পারছিলেন না রুট। শেষ পর্যন্ত ৩০ বলে মাত্র ৭ রান করে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। দলীয় ৭১ রানে লকি ফার্গুসনের শিকারে পরিণত হন ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। ইনসাইড এজ থেকে এই ম্যাচে অন্তত তিন বার বেঁচে গিয়েছিলেন। ৫৫ বলে ৭টি চারে ৩৬ করে তিনি বোল্ড হন।

দলীয় ৮৬ রানে জেমস নিশামের বলে তুলে মারতে গিয়ে ফার্গুসনের তালুবন্দি হন ইংলিশ অধিনায়ক। এতে আরো বিপদে পড়েছিল ইংল্যান্ড। ২২ বলে ৯ রান করেন তিনি।

বিপর্যয় কাটিয়ে ইংল্যান্ডকে শিরোপা জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন বেন স্টোকস ও জস বাটলার। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তারা ১১০ রান তোলেন। তবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২০তম হাফসেঞ্চুরি তুলে লকি ফার্গুসনের দ্বিতীয় শিকারে মাঠ ছাড়েন বাটলার (৫৯)। ৬০ বলে ৬টি চারের সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান তিনি। দলীয় ২০৩ রানে সেই ফার্গুসনের শিকার হন ক্রিস ওকস। ৪ বলে ২ রান তার।

৪৯তম ওভারে জিমি নিশামের বলে বোল্টের ক্যাচ হয়ে ফিরলেন প্লাঙ্কেট (১০)। স্কোরকার্ডে ৭ রান যোগ হতেই আর্চারকে (০) বোল্ড করে ফেরালেন নিশাম।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৫ রান। বেন স্টোকস প্রথম দুই বলে রান পাননি। তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকান। চতুর্থ বলে ডাবল রান নেওয়ার পথে স্টোকসের ব্যাটে লেগে অতিরিক্ত আরও চার রান আসে। পঞ্চম বলে রানআউট হন আদিল রশিদ। শেষ বলে দরকার হয় ২ রানের। ডাবল রান নেওয়ার পথে রানআউট হন মার্ক উড। ম্যাচ টাই হলে গড়ায় সুপার ওভারে। বেন স্টোকস ৯৮ বলে ৫ চার আর ২ ছক্কায় ৮৪ রান করে অপরাজিত থাকেন।

দৌড়ে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হন উড। তবে সমতায় স্কোর শেষ করায় সুপার ওভারে গড়ায় ফাইনাল। ৫০ ওভারে ২৪১ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা।

সুপার ওভারে আগে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। বোল্টের ওভারে স্টোকস ও বাটলারের ব্যাটে ১৫ রান করে তারা। স্টোকস ও বাটলার একটি করে বাউন্ডারি মারেন। লক্ষ্যে নেমে জোফরা আর্চারের প্রথম দুই বলেই আসে ৯ রান। প্রথম বল ওয়াইডের পর নিশাম ৬ মারেন। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে ২টি করে রান নেন নিশাম। তাতে শেষ ২ বলে ৩ রান দরকার ছিল কিউইদের। আর শেষ বলে লক্ষ্য ছিল ২ রানের। মার্টিন গাপটিল দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হন। এতে টাই হয় সুপার ওভারও। কিন্তু মূল ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোয় প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড।