ঢাকা ০২:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশকে বিদায় করে সেমিতে ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক :  লক্ষ্যটা বড় হলেও অসম্ভব ছিলো না। বিশেষ করে চলতি আসরেই আগের ৬ ম্যাচে যে দল ৩ বার পেরিয়েছে ৩০০ রানের কোটা, তাদের জন্য ৩১৫ রানের লক্ষ্যটা অন্তত ধরাছোয়ার মধ্যেই ছিলো। তার ওপর মাথায় যখন ঝুলছে হারলেই বিদায় হওয়ার শঙ্কা, তখন নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে হলেও এ লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলা উচিৎ ছিলো বাংলাদেশ দলের।এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল বাংলাদেশের। মঙ্গলবার ভারতের কাছে ২৮ রানে হেরে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন ধুলোয় মিশে গেল টাইগারদের। অন্যদিকে, এই ম্যাচে জয়ের ফলে দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিতে উঠে গেল ভারত। এর আগে প্রথম দল হিসাবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।

আরো পড়ুন :  রিফাত হত্যায় জড়িত প্রভাবশালীরাও রেহাই পাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

৮ ম্যাচ খেলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশ এখন সপ্তম অবস্থানে আছে। ৫ জুলাই বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। অন্যদিকে, ৮ ম্যাচ খেলে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ভারত। ৬ জুলাই লিগ পর্বের শেষ দিন শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বিরাট কোহলির দল।

দশটি দল নিয়ে শুরু হওয়া বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত বিদায় হয়েছে আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের। সেমিতে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। আর সেমির লড়াইয়ে টিকে আছে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান।

এদিন বার্মিংহামের এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ভারতের দেয়া ৩১৫ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪৮ ওভারে ২৮৬ রান করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন সাকিব আল হাসান।৩৮ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে হার্দিক পান্ডিয়া ৩টি, যুজবেন্দ্র চাহাল ১টি, মোহাম্মদ শামি ১টি ও জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ৪টি করে উইকেট শিকার করেন।

বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৩৯ রানে প্রথম উইকেট হারায়। ইনিংসের দশম ওভারে মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হন তামিম ইকবাল। ফেরার আগে ৩১ বলে ২২ রান করেন এই টাইগার ওপেনার। তামিমের পর ফিরে যান সৌম্য সরকার। ১৬তম ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার বলে এক্সট্রা কাভারে কোহলির হাতে ধরা পড়েন তিনি। সৌম্যর সংগ্রহ ৩৩ রান।

এরপর সাকিব-মুশফিকের ব্যাটে ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম। ইনিংসের ২৩তম ওভারে চাহালের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিডউইকেটে শামির হাতে ধরা পড়েন তিনি। তার সংগ্রহ ২৪ রান। সাকিব-মুশফিক মিলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন।

মুশফিক ফিরলেও সাকিব-লিটন জুটিতে জ্বলছিল আশার আলো। কিন্তু এই জুটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ১৬২ রানে হার্দিকের বলে দিনেশ কার্তিকের হাতে ধরা পড়েন লিটন। ২৪ বলে ২২ রান করেন তিনি। এরপর মোসাদ্দেক নেমে মাত্র ৭ বলে ৩ রান করে ফিরে যান।

৫ উইকেট পড়ে গেলেও সাকিবের দিকে তাকিয়ে ছিল দল। কিন্তু তিনিও হতাশ করেন। দলীয় ১৭৯ রানে কার্তিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরে যান। ছয় উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ৬৬ রানের জুটি গড়েন সাব্বির রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দলীয় ২৪৫ রানে বুমরাহর বলে বোল্ড হন সাব্বির। ৩৬ বলে ৩৬ রান করেন তিনি। সাব্বির ফেরার পর অধিনায়ক মাশরাফি নেমে ৮ রান করে ফিরে যান। ৪৮তম ওভারে আউট হন রুবেল ও মোস্তাফিজ।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১৪ রান সংগ্রহ করে ভারত। শুরুর দিকে দ্রুতগতিতে রান তুললেও শেষদিকে মোস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে রানের গতি কমে যায় ভারতের।

দলের পক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন রোহিত শর্মা। ১০৪ রান করে আউট হন তিনি। ৭৭ রান করেন অপর ওপেনার লোকেশ রাহুল। অধিনায়ক কোহলির ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ৫টি, রুবেল হোসেন ১টি, সাকিব আল হাসান ১টি, ও সৌম্য সরকার ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফল: ২৮ রানে জয়ী ভারত।

ভারত ইনিংস: ৩১৪/৯ (৫০ ওভার)

(লোকেশ রাহুল ৭৭, রোহিত শর্মা ১০৪, বিরাট কোহলি ২৬, রিশাব পান্ত ৪৮, হার্দিক পান্ডিয়া ০, মহেন্দ্র সিং ধোনি ৩৫, দিনেশ কার্তিক ৮, ভুবনেশ্বর কুমার ২, মোহাম্মদ শামি ১, জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ০*; মাশরাফি বিন মর্তুজা ০/৩৬, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ০/৫৯, মোস্তাফিজুর রহমান ৫/৫৯, সাকিব আল হাসান ১/৪১, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/৩২, রুবেল হোসেন ১/৪৮, সৌম্য সরকার ১/৩৩)।

বাংলাদেশ ইনিংস: ২৮৬ (৪৮ ওভার)

(তামিম ইকবাল ২২, সৌম্য সরকার ৩৩, সাকিব আল হাসান ৬৬, মুশফিকুর রহিম ২৪, লিটন দাস ২২, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৩, সাব্বির রহমান ৩৬, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৫১*, মাশরাফি বিন মর্তুজা ৮, রুবেল হোসেন ৯, মোস্তাফিজুর রহমান ০; ভুবনেশ্বর কুমার ১/৫১, জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ৪/৫৫, মোহাম্মদ শামি ১/৬৮, যুজবেন্দ্র চাহাল ১/৫০, হার্দিক পান্ডিয়া ৩/৬০)।

ম্যাচ সেরা: রোহিত শর্মা (ভারত)।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

বাংলাদেশকে বিদায় করে সেমিতে ভারত

আপডেট টাইম : ০৫:৪৯:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০১৯

স্পোর্টস ডেস্ক :  লক্ষ্যটা বড় হলেও অসম্ভব ছিলো না। বিশেষ করে চলতি আসরেই আগের ৬ ম্যাচে যে দল ৩ বার পেরিয়েছে ৩০০ রানের কোটা, তাদের জন্য ৩১৫ রানের লক্ষ্যটা অন্তত ধরাছোয়ার মধ্যেই ছিলো। তার ওপর মাথায় যখন ঝুলছে হারলেই বিদায় হওয়ার শঙ্কা, তখন নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে হলেও এ লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলা উচিৎ ছিলো বাংলাদেশ দলের।এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল বাংলাদেশের। মঙ্গলবার ভারতের কাছে ২৮ রানে হেরে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন ধুলোয় মিশে গেল টাইগারদের। অন্যদিকে, এই ম্যাচে জয়ের ফলে দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিতে উঠে গেল ভারত। এর আগে প্রথম দল হিসাবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।

আরো পড়ুন :  রিফাত হত্যায় জড়িত প্রভাবশালীরাও রেহাই পাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

৮ ম্যাচ খেলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশ এখন সপ্তম অবস্থানে আছে। ৫ জুলাই বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। অন্যদিকে, ৮ ম্যাচ খেলে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ভারত। ৬ জুলাই লিগ পর্বের শেষ দিন শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বিরাট কোহলির দল।

দশটি দল নিয়ে শুরু হওয়া বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত বিদায় হয়েছে আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের। সেমিতে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। আর সেমির লড়াইয়ে টিকে আছে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান।

এদিন বার্মিংহামের এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ভারতের দেয়া ৩১৫ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪৮ ওভারে ২৮৬ রান করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন সাকিব আল হাসান।৩৮ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে হার্দিক পান্ডিয়া ৩টি, যুজবেন্দ্র চাহাল ১টি, মোহাম্মদ শামি ১টি ও জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ৪টি করে উইকেট শিকার করেন।

বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৩৯ রানে প্রথম উইকেট হারায়। ইনিংসের দশম ওভারে মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হন তামিম ইকবাল। ফেরার আগে ৩১ বলে ২২ রান করেন এই টাইগার ওপেনার। তামিমের পর ফিরে যান সৌম্য সরকার। ১৬তম ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার বলে এক্সট্রা কাভারে কোহলির হাতে ধরা পড়েন তিনি। সৌম্যর সংগ্রহ ৩৩ রান।

এরপর সাকিব-মুশফিকের ব্যাটে ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম। ইনিংসের ২৩তম ওভারে চাহালের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিডউইকেটে শামির হাতে ধরা পড়েন তিনি। তার সংগ্রহ ২৪ রান। সাকিব-মুশফিক মিলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন।

মুশফিক ফিরলেও সাকিব-লিটন জুটিতে জ্বলছিল আশার আলো। কিন্তু এই জুটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ১৬২ রানে হার্দিকের বলে দিনেশ কার্তিকের হাতে ধরা পড়েন লিটন। ২৪ বলে ২২ রান করেন তিনি। এরপর মোসাদ্দেক নেমে মাত্র ৭ বলে ৩ রান করে ফিরে যান।

৫ উইকেট পড়ে গেলেও সাকিবের দিকে তাকিয়ে ছিল দল। কিন্তু তিনিও হতাশ করেন। দলীয় ১৭৯ রানে কার্তিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরে যান। ছয় উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ৬৬ রানের জুটি গড়েন সাব্বির রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দলীয় ২৪৫ রানে বুমরাহর বলে বোল্ড হন সাব্বির। ৩৬ বলে ৩৬ রান করেন তিনি। সাব্বির ফেরার পর অধিনায়ক মাশরাফি নেমে ৮ রান করে ফিরে যান। ৪৮তম ওভারে আউট হন রুবেল ও মোস্তাফিজ।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১৪ রান সংগ্রহ করে ভারত। শুরুর দিকে দ্রুতগতিতে রান তুললেও শেষদিকে মোস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে রানের গতি কমে যায় ভারতের।

দলের পক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন রোহিত শর্মা। ১০৪ রান করে আউট হন তিনি। ৭৭ রান করেন অপর ওপেনার লোকেশ রাহুল। অধিনায়ক কোহলির ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ৫টি, রুবেল হোসেন ১টি, সাকিব আল হাসান ১টি, ও সৌম্য সরকার ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফল: ২৮ রানে জয়ী ভারত।

ভারত ইনিংস: ৩১৪/৯ (৫০ ওভার)

(লোকেশ রাহুল ৭৭, রোহিত শর্মা ১০৪, বিরাট কোহলি ২৬, রিশাব পান্ত ৪৮, হার্দিক পান্ডিয়া ০, মহেন্দ্র সিং ধোনি ৩৫, দিনেশ কার্তিক ৮, ভুবনেশ্বর কুমার ২, মোহাম্মদ শামি ১, জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ০*; মাশরাফি বিন মর্তুজা ০/৩৬, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ০/৫৯, মোস্তাফিজুর রহমান ৫/৫৯, সাকিব আল হাসান ১/৪১, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/৩২, রুবেল হোসেন ১/৪৮, সৌম্য সরকার ১/৩৩)।

বাংলাদেশ ইনিংস: ২৮৬ (৪৮ ওভার)

(তামিম ইকবাল ২২, সৌম্য সরকার ৩৩, সাকিব আল হাসান ৬৬, মুশফিকুর রহিম ২৪, লিটন দাস ২২, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৩, সাব্বির রহমান ৩৬, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৫১*, মাশরাফি বিন মর্তুজা ৮, রুবেল হোসেন ৯, মোস্তাফিজুর রহমান ০; ভুবনেশ্বর কুমার ১/৫১, জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ৪/৫৫, মোহাম্মদ শামি ১/৬৮, যুজবেন্দ্র চাহাল ১/৫০, হার্দিক পান্ডিয়া ৩/৬০)।

ম্যাচ সেরা: রোহিত শর্মা (ভারত)।