ঢাকা ০৮:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রকাশ্যে মানুষটাকে মারল, কেউ এগিয়ে আসল না: হাইকোর্ট

আলোর জগত ডেস্ক :  বরগুনায় রিফাত শরীফকে (২৫) প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার সময় স্ত্রী ছাড়া কেউ এগিয়ে না আসায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

আরো পড়ুন :  টঙ্গীতে ট্রাক-লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২

আরো পড়ুন :  স্ত্রীর সামনেই স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা : গ্রেফতার ১

আদালত বলেছেন, ওপেন কোপানো হলো, অথচ তার স্ত্রী ছাড়া একটা মানুষও ঠেকাতে আসলো না। দাঁড়িয়ে ভিডিও করলেন, কেউ এগিয়ে আসলেন না, এটা প্রত্যেক জনগণেরও ব্যর্থতা। সবাই এগিয়ে এলে তো সাহস পেতো না খুনিরা।

বুধবার সকালে বরগুনার কলেজ রোড এলাকার হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ হত্যাকাণ্ডের প্রকাশিত প্রতিবেদন আজ বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

পরে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না বা কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা বেলা দুইটায় আদালতকে জানাতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলা হয়েছে।

গণমাধ্যমে দিনেদুপুরে স্ত্রী আয়েশা আক্তারের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা নিয়ে আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস আদালতে বলেন, যতটুকু জেনেছি, এখনো মামলা হয়নি। এমন অপরাধের ঘটনার বিচার যদি কোনো কারণে বিলম্ব হয় ও বিচারহীন হয়, তাহলে আরও এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে বিচার হবে আশা করছি।

আদালত বলেন, প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষটাকে মারল। একজন ছাড়া কেউ এগিয়ে আসল না। জনগণকে আপনি কী করবেন? বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন ছিল না। ভিডিও করল, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসল না। এটি জনগণের ব্যর্থতা। তাই এই সামাজিক সচেতনতা তৈরি করবে কে? দাঁড়িয়ে দেখেছে, কেউ প্রতিবাদ করল না। পাঁচজন মানুষ অন্তত এগিয়ে আসলে হয়তো তারা সাহস পেত না। হয়তো তারা (দুর্বৃত্তরা) ক্ষমতাবান, হয়তো মানুষ ভয়ে এগিয়ে আসেনি।

এ সময় আদালত জানতে চান, মামলা হয়েছে কি না। উপস্থিত এক আইনজীবী বলেন, নিহত রিফাতের বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর আদালত ডেপুটি অ্যাটর্নি এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারকে ওই তথ্য বেলা দুইটায় আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে গতকাল বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওইদিন সকাল ১০টার দিকে নয়নের নেতৃত্বে চার থেকে পাঁচজন সন্ত্রাসী রিফাতকে দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায়। এ সময় বারবার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।

এক পর্যায়ে গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে রিফাত মারা যান। বর্তমানে রিফাতের মরদেহ বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

এ ঘটনায় বুধবার রাতেই নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। এ পর্যন্ত চন্দন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় চন্দন ৪ নং এজাহারভুক্ত আসামি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

প্রকাশ্যে মানুষটাকে মারল, কেউ এগিয়ে আসল না: হাইকোর্ট

আপডেট টাইম : ০৭:১৮:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০১৯

আলোর জগত ডেস্ক :  বরগুনায় রিফাত শরীফকে (২৫) প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার সময় স্ত্রী ছাড়া কেউ এগিয়ে না আসায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

আরো পড়ুন :  টঙ্গীতে ট্রাক-লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২

আরো পড়ুন :  স্ত্রীর সামনেই স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা : গ্রেফতার ১

আদালত বলেছেন, ওপেন কোপানো হলো, অথচ তার স্ত্রী ছাড়া একটা মানুষও ঠেকাতে আসলো না। দাঁড়িয়ে ভিডিও করলেন, কেউ এগিয়ে আসলেন না, এটা প্রত্যেক জনগণেরও ব্যর্থতা। সবাই এগিয়ে এলে তো সাহস পেতো না খুনিরা।

বুধবার সকালে বরগুনার কলেজ রোড এলাকার হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ হত্যাকাণ্ডের প্রকাশিত প্রতিবেদন আজ বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

পরে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না বা কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা বেলা দুইটায় আদালতকে জানাতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলা হয়েছে।

গণমাধ্যমে দিনেদুপুরে স্ত্রী আয়েশা আক্তারের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা নিয়ে আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস আদালতে বলেন, যতটুকু জেনেছি, এখনো মামলা হয়নি। এমন অপরাধের ঘটনার বিচার যদি কোনো কারণে বিলম্ব হয় ও বিচারহীন হয়, তাহলে আরও এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে বিচার হবে আশা করছি।

আদালত বলেন, প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষটাকে মারল। একজন ছাড়া কেউ এগিয়ে আসল না। জনগণকে আপনি কী করবেন? বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন ছিল না। ভিডিও করল, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসল না। এটি জনগণের ব্যর্থতা। তাই এই সামাজিক সচেতনতা তৈরি করবে কে? দাঁড়িয়ে দেখেছে, কেউ প্রতিবাদ করল না। পাঁচজন মানুষ অন্তত এগিয়ে আসলে হয়তো তারা সাহস পেত না। হয়তো তারা (দুর্বৃত্তরা) ক্ষমতাবান, হয়তো মানুষ ভয়ে এগিয়ে আসেনি।

এ সময় আদালত জানতে চান, মামলা হয়েছে কি না। উপস্থিত এক আইনজীবী বলেন, নিহত রিফাতের বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর আদালত ডেপুটি অ্যাটর্নি এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারকে ওই তথ্য বেলা দুইটায় আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে গতকাল বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওইদিন সকাল ১০টার দিকে নয়নের নেতৃত্বে চার থেকে পাঁচজন সন্ত্রাসী রিফাতকে দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায়। এ সময় বারবার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।

এক পর্যায়ে গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে রিফাত মারা যান। বর্তমানে রিফাতের মরদেহ বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

এ ঘটনায় বুধবার রাতেই নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। এ পর্যন্ত চন্দন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় চন্দন ৪ নং এজাহারভুক্ত আসামি।