ঢাকা ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে সারা দেশে নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা

আলোর জগত ডেস্ক:   অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে সারা দেশে সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)। সেই সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রতিষ্ঠানটির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিআইডাব্লিউটিএ এ ঘোষণা দেয়।

আরো পড়ুন :   নৌ-মন্ত্রণালয়ে ছুটি বাতিল, শুক্র-শনি অফিস খোলা

নৌ-পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দেশের সকল রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।

বিআইডাব্লিউটিএ থেকে জানানো হয়, উপকূলে বিপদ সংকেত জারি হওয়ায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সব নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সুপার সাইক্লোনে রূপ নেয়া ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লহ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লহ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলাগুলো এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১১০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ফণী সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৫ হাজার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।

এ কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-২৮) জানানো হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণি সামান্য উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১ হাজার ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এদিকে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে উপকূলী ১৯ জেলার প্রশাসন। প্রস্তুতির একেবারে গোরাতেই ছুটি বাতিল করা হয়েছে ত্রাণ কাজে জড়িত সকল সরকারি কর্মকর্তাদের।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে সারা দেশে নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা

আপডেট টাইম : ০৬:২৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০১৯

আলোর জগত ডেস্ক:   অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে সারা দেশে সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)। সেই সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রতিষ্ঠানটির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিআইডাব্লিউটিএ এ ঘোষণা দেয়।

আরো পড়ুন :   নৌ-মন্ত্রণালয়ে ছুটি বাতিল, শুক্র-শনি অফিস খোলা

নৌ-পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দেশের সকল রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।

বিআইডাব্লিউটিএ থেকে জানানো হয়, উপকূলে বিপদ সংকেত জারি হওয়ায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সব নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সুপার সাইক্লোনে রূপ নেয়া ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লহ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লহ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলাগুলো এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১১০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ফণী সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৫ হাজার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।

এ কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-২৮) জানানো হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণি সামান্য উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১ হাজার ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এদিকে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে উপকূলী ১৯ জেলার প্রশাসন। প্রস্তুতির একেবারে গোরাতেই ছুটি বাতিল করা হয়েছে ত্রাণ কাজে জড়িত সকল সরকারি কর্মকর্তাদের।