আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কেন্দ্রস্থলে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে গতকাল শনিবার আত্মঘাতী ও বন্দুক হামলা চালানো হয়েছে। এতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ সাতজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আটজন। স্থানীয় সময় সকাল প্রায় ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে হামলা শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টা গোলাগুলি অব্যাহত ছিল বলে আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে এই হামলা কে বা কারা চালিয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তালেবান জানিয়েছে, এর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
আরো পড়ুন : শবেবরাতে আতশবাজি ফোটানো নিষেধ
আরো পড়ুন : নুসরাত হত্যা: আরেক পরিকল্পনাকারী রাঙ্গামাটি থেকে গ্রেপ্তার
আরো পড়ুন : পবিত্র শবে বরাত আজ
নগরীর ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকার যে বহুতল ভবনটিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থান তার প্রবেশপথে বিস্ফোরণ ঘটানোর মাধ্যমে হামলা শুরু হয়। এ সময় অন্তত দুই হাজার মানুষ ভবনের মধ্যে আটকা পড়ে। এরপর শুরু হয় গুলি, যার শব্দ মাইলখানেক দূর থেকেও শোনা গেছে। তিন বন্দুকধারী হামলাটি চালিয়েছে এবং তাদের মধ্যে একজন ভবনটির ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। বিকেলের দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসরাত রাহিমি জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অন্তত দুই হামলাকারী নিহত হয়েছে এবং এর পর থেকে গুলির শব্দ আর শোনা যায়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, আজকের (শনিবার) হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনায় চার বেসামরিক ও তিন আফগান পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং আরো আটজন আহত হয়েছে। এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমানুদ্দিন শারিয়াতি বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা তথ্য মতে, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাছে চার হামলাকারী আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।’
এ ছাড়া অন্য এক হামলাকারী সীমানা দেয়ালের কাছে নিজের শরীরে বাঁধা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। পুলিশ ভবনটির আশপাশের এলাকা বন্ধ করে দিয়েছে। বিকেল ৫টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, ‘আমাদের অভিযান শেষ হয়েছে। আত্মঘাতী হামলাকারীরা নিহত এবং আটকে পড়া দুই হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।’
আটকে পড়া এক নারী বলেন, গোলাগুলি শুরুর সময় তিনি ৩০ জনের একটি দলের সঙ্গে ভবনের ১০ তলায় ছিলেন। গুলি বাড়তে শুরু করলে তাঁদের ১৮ তলায় চলে যেতে বলা হয়। গোলাগুলি থেমে যাওয়ার পর কমান্ডোরা এসে তাঁদের উদ্ধার করে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে তালেবানের বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারের আলোচনা স্থগিত হওয়ার পর পর হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। মন্ত্রণালয়টির আশপাশে আরো কয়েকটি মন্ত্রণালয়, প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় আবাসিক হোটেলের অবস্থান। কাবুলে হাতে গোনা যে কটি হোটেলে এখনো বিদেশি পর্যটকরা ওঠে, অত্যন্ত সুরক্ষিত সেরেনা হোটেল এর অন্যতম।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ১৮ তলা ভবনটি কাবুলের অন্যতম সবচেয়ে উঁচু ভবন। ভবনটি থেকে কয়েক শ বেসামরিক লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।