ঢাকা ১২:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

হত্যার আগে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নেয় পপি

আলোর জগত ডেস্ক :  কেরোসিন ঢেলে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে উম্মে সুলতানা পপি। নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার আগে পপি তাকে (নুসরাতকে) ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল বলে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছে। গতকাল শুক্রবার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানিয়েছে পপি।

নুসরাতকে যৌন হয়রানির মামলায় জেলে থাকা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার ভাগ্নি পপি। এবং একই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল এসপি মো. ইকবাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘পপি আদালতের কাছে স্বীকার করেছে, সে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল।’

তার নাম পপি হলেও ঘটনার দিন খুনিরা তার পরিচয় গোপন রেখে ‘শম্পা’ নামে ডাকে। সেজন্য নুসরাতও তাকে ডেকে নেওয়া বোরকাপরিহিত মেয়েটির নাম শম্পা বলে গিয়েছিল।

আরো পড়ুন :   চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

আরো পড়ুন :   দুই জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ও ‘গোলাগুলিতে’ নিহত ২

পপি ছাড়াও এর আগে মামলার চার আসামি নুসরাতকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তারা হলো- মামলার এজহারভুক্ত আসামি নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরীফ ও হাফেজ আবদুল কাদের।

এদিকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জাবেদ হোসেনকে একই বিচারক আরও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। সাত দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশ তাকে আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করলে আদালত তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এছাড়া নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় অংশ নেওয়া তার বান্ধবী কামরুন নাহার মণিকে নিয়ে গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পিবিআই কর্মকর্তারা।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে থানায় মামলা করেন নুসরাতের মা। এরপর থেকেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য পরিবারটিকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তবে প্রতিবাদে অনড় ছিলেন নুসরাত।

গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় বোরকা পরা ৪/৫জন নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।

চাঞ্চল্যকর এই মামলার আসামিদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একে একে গ্রেপ্তার করা হয় এজাহারভুক্ত আট আসামিসহ ১৮ জনকে। এর মধ্যে ১০ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পপিকে। এরপর ১১ এপ্রিল তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে পপি আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হয়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

হত্যার আগে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নেয় পপি

আপডেট টাইম : ০২:৫০:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৯

আলোর জগত ডেস্ক :  কেরোসিন ঢেলে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে উম্মে সুলতানা পপি। নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার আগে পপি তাকে (নুসরাতকে) ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল বলে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছে। গতকাল শুক্রবার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানিয়েছে পপি।

নুসরাতকে যৌন হয়রানির মামলায় জেলে থাকা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার ভাগ্নি পপি। এবং একই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল এসপি মো. ইকবাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘পপি আদালতের কাছে স্বীকার করেছে, সে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল।’

তার নাম পপি হলেও ঘটনার দিন খুনিরা তার পরিচয় গোপন রেখে ‘শম্পা’ নামে ডাকে। সেজন্য নুসরাতও তাকে ডেকে নেওয়া বোরকাপরিহিত মেয়েটির নাম শম্পা বলে গিয়েছিল।

আরো পড়ুন :   চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

আরো পড়ুন :   দুই জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ও ‘গোলাগুলিতে’ নিহত ২

পপি ছাড়াও এর আগে মামলার চার আসামি নুসরাতকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তারা হলো- মামলার এজহারভুক্ত আসামি নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরীফ ও হাফেজ আবদুল কাদের।

এদিকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জাবেদ হোসেনকে একই বিচারক আরও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। সাত দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশ তাকে আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করলে আদালত তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এছাড়া নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় অংশ নেওয়া তার বান্ধবী কামরুন নাহার মণিকে নিয়ে গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পিবিআই কর্মকর্তারা।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে থানায় মামলা করেন নুসরাতের মা। এরপর থেকেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য পরিবারটিকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তবে প্রতিবাদে অনড় ছিলেন নুসরাত।

গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় বোরকা পরা ৪/৫জন নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।

চাঞ্চল্যকর এই মামলার আসামিদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একে একে গ্রেপ্তার করা হয় এজাহারভুক্ত আট আসামিসহ ১৮ জনকে। এর মধ্যে ১০ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পপিকে। এরপর ১১ এপ্রিল তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে পপি আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হয়।