ঢাকা ১২:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫

রোহিঙ্গারা শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা অঞ্চলের জন্যই হুমকি: প্রধানমন্ত্রী

আলোর জগত ডেস্কঃ  রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এই সংকটকে গোটা অঞ্চলের হুমকি হিসেবেই দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য বাংলাদেশে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়লগ-২০১৯’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুনঃ   ঝিনাইদহে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আসার পরও তাদের সঙ্গে আমরা ঝগড়ায় লিপ্ত হইনি। সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের গ্রামে গ্রামে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন ও জ্বালাও পোড়াও চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে এসে আশ্রয় নেয়। এর আগেও চার লাখের মতো রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে আসছিল। সব মিলিয়ে এই সংখ্যাটা ১১ লাখের মতো।

বাংলাদেশে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য গত বছরের ১৫ নভেম্বর প্রথম সময়সীমা ঠিক হয়েছিল। কিন্তু রোহিঙ্গারা রাজি না হওয়ায় সেবার একজনকেও রাখাইনে পাঠানো যায়নি। গত ২২ আগস্ট দ্বিতীয় দফা প্রত্যাবাসন শুরুর দিনক্ষণ ঠিক হলেও রোহিঙ্গাদের সেই পুরনো অনাগ্রহে দ্বিতীয় দফাতেও ভেস্তে যায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।

বাংলাদেশে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গাদের এই সংকট বাংলাদেশ ছাড়াও এই অঞ্চলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি। এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে এ সমস্যার আশু সমাধান প্রয়োজন।

আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর তথা ভারত মহাসাগর বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলে সবচেয়ে বড় শত্রু দারিদ্র। সেটি একসঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। শিক্ষা শান্তি ও নিরাপত্তা ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি করতে পারে না। এ বিষয়গুলো সামনে রেখেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

এসময় জলবায়ুর পরিবর্তনে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ক্ষতিরোধে কাজ করছে সরকার। দুর্যোগ মোকাবেলায় সতর্ক সরকার। প্রকল্প গ্রহণের আগে পরিবেশ রক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও ভারতের অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) যৌথভাবে এ ডায়ালগের আয়োজন করছে।

আয়োজনটি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মানব উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি ও সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়।

এতে এ অঞ্চলের ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। বিশ্বের ৫০টি দেশ থেকে প্রায় ১৫০ বিশিষ্ট ব‌্যক্তি এ সংলাপে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ আয়োজন চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

রোহিঙ্গারা শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা অঞ্চলের জন্যই হুমকি: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৩:৩৯:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯

আলোর জগত ডেস্কঃ  রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এই সংকটকে গোটা অঞ্চলের হুমকি হিসেবেই দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য বাংলাদেশে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়লগ-২০১৯’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুনঃ   ঝিনাইদহে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আসার পরও তাদের সঙ্গে আমরা ঝগড়ায় লিপ্ত হইনি। সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের গ্রামে গ্রামে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন ও জ্বালাও পোড়াও চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে এসে আশ্রয় নেয়। এর আগেও চার লাখের মতো রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে আসছিল। সব মিলিয়ে এই সংখ্যাটা ১১ লাখের মতো।

বাংলাদেশে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য গত বছরের ১৫ নভেম্বর প্রথম সময়সীমা ঠিক হয়েছিল। কিন্তু রোহিঙ্গারা রাজি না হওয়ায় সেবার একজনকেও রাখাইনে পাঠানো যায়নি। গত ২২ আগস্ট দ্বিতীয় দফা প্রত্যাবাসন শুরুর দিনক্ষণ ঠিক হলেও রোহিঙ্গাদের সেই পুরনো অনাগ্রহে দ্বিতীয় দফাতেও ভেস্তে যায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।

বাংলাদেশে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গাদের এই সংকট বাংলাদেশ ছাড়াও এই অঞ্চলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি। এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে এ সমস্যার আশু সমাধান প্রয়োজন।

আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর তথা ভারত মহাসাগর বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলে সবচেয়ে বড় শত্রু দারিদ্র। সেটি একসঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। শিক্ষা শান্তি ও নিরাপত্তা ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি করতে পারে না। এ বিষয়গুলো সামনে রেখেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

এসময় জলবায়ুর পরিবর্তনে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ক্ষতিরোধে কাজ করছে সরকার। দুর্যোগ মোকাবেলায় সতর্ক সরকার। প্রকল্প গ্রহণের আগে পরিবেশ রক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও ভারতের অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) যৌথভাবে এ ডায়ালগের আয়োজন করছে।

আয়োজনটি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মানব উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি ও সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়।

এতে এ অঞ্চলের ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। বিশ্বের ৫০টি দেশ থেকে প্রায় ১৫০ বিশিষ্ট ব‌্যক্তি এ সংলাপে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ আয়োজন চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।