ঢাকা ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম :
Logo অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামি শরিফুল শেখ ও তথি বেগম’কে ফরিদপুরের কোতোয়ালি এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী এলাকা হতে ২৩.৫ কেজি গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা Logo আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরামের শ্রদ্ধা

নুসরাতের ‘গলা চেপে ধরে’ মনি, ‘কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়’ জাবেদ

আলোর জগত ডেস্ক :   ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাবন্দি দিয়েছেন তার সহপাঠী কামরুন্নাহার মনি ও জাবেদ। গতকাল শনিবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তারা।

আদালতে এ দুই জন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে, নুসরাতকে হাত-পা বাঁধার পর মনি ছাদে শুইয়ে গলা চেপে ধরেন। আর আসামি জাবেদ সে সময় নুসরাতের গায়ে এক লিটার কেরোসিন ঢেলে ম্যাচ জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

কয়েক ঘণ্টাব্যাপী জবাবন্দি রেকর্ডের পর রাত ১০টার দিকে তাদের জবাববন্দির ব্যাপারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পিবিআই’র চট্টগ্রাম বিভাগের স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।

আরো পড়ুন :   নুসরাত হত্যা: আরেক পরিকল্পনাকারী রাঙ্গামাটি থেকে গ্রেপ্তার

আরো পড়ুন :   বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আমিনুল হক আর নেই

এসপি ইকবাল আরো বলেন, কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ স্বীকারোক্তিমূলক জবাবনন্দিতে এ দুজন হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য দিয়েছেন। জবানবন্দিতে নতুন কিছু নামও উঠে এসেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করা যাবে না।

কামরুন নাহার মনিকে ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৭ এপ্রিল আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুক্রবার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পিবিআই। সে সময় মনি কিভাবে নুসরাতকে হত্যা করা হয়েছে তার বর্ণনা দেন।

অপরদিকে জাবেদকে গত ১৩ এপিল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন থেকে তাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত তাকে ফের তিন দিনের রিমান্ড দেন।

৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করেছে, এমন সংবাদ দিলে নুসরাত ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যান। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫ জন ছাত্রী নুসরাতকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়।

অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল (সোমবার) রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলমসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।

ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজহারের ৮ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা হলেন- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, ইফতেখার হোসেন রানা ও এমরান হোসেন মামুন।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ৭ জন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকেও আটক করেছে পিবিআই। রুহুল আমিন নুসরাতের প্রতিষ্ঠান সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি। এই কমিটি শুক্রবার বাতিল করা হয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

নুসরাতের ‘গলা চেপে ধরে’ মনি, ‘কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়’ জাবেদ

আপডেট টাইম : ০২:১৫:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৯

আলোর জগত ডেস্ক :   ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাবন্দি দিয়েছেন তার সহপাঠী কামরুন্নাহার মনি ও জাবেদ। গতকাল শনিবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তারা।

আদালতে এ দুই জন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে, নুসরাতকে হাত-পা বাঁধার পর মনি ছাদে শুইয়ে গলা চেপে ধরেন। আর আসামি জাবেদ সে সময় নুসরাতের গায়ে এক লিটার কেরোসিন ঢেলে ম্যাচ জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

কয়েক ঘণ্টাব্যাপী জবাবন্দি রেকর্ডের পর রাত ১০টার দিকে তাদের জবাববন্দির ব্যাপারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পিবিআই’র চট্টগ্রাম বিভাগের স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।

আরো পড়ুন :   নুসরাত হত্যা: আরেক পরিকল্পনাকারী রাঙ্গামাটি থেকে গ্রেপ্তার

আরো পড়ুন :   বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আমিনুল হক আর নেই

এসপি ইকবাল আরো বলেন, কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ স্বীকারোক্তিমূলক জবাবনন্দিতে এ দুজন হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য দিয়েছেন। জবানবন্দিতে নতুন কিছু নামও উঠে এসেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করা যাবে না।

কামরুন নাহার মনিকে ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৭ এপ্রিল আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুক্রবার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পিবিআই। সে সময় মনি কিভাবে নুসরাতকে হত্যা করা হয়েছে তার বর্ণনা দেন।

অপরদিকে জাবেদকে গত ১৩ এপিল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন থেকে তাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত তাকে ফের তিন দিনের রিমান্ড দেন।

৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করেছে, এমন সংবাদ দিলে নুসরাত ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যান। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫ জন ছাত্রী নুসরাতকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়।

অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল (সোমবার) রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলমসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।

ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজহারের ৮ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা হলেন- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ-উদ-দৌলা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, ইফতেখার হোসেন রানা ও এমরান হোসেন মামুন।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ৭ জন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকেও আটক করেছে পিবিআই। রুহুল আমিন নুসরাতের প্রতিষ্ঠান সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি। এই কমিটি শুক্রবার বাতিল করা হয়েছে।