আলোর জগত ডেস্ক : দাদীর পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা নুসরাত জাহান রাফি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সোনাগাজী ছাবের পাইলট হাইস্কুল মাঠে জানাজা শেষে নিজ বাড়ী চরচান্দিয়ায় সামাজিক কবরস্থানে দাদীর কবরের পাশে শায়িত করা হয়েছ।
জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল দেখাগেছে। স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছিল। রাফির ভাইকে বারবার মূর্চাযেতে দেখা গেছে। নারী পুরুষের এ রকম আনাগোনা সোনাগাজীর মানুষ আর কখনও দেখেনি। যে মাদরাসায় পড়াশুনা করা অবস্থায় শরীরে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হাসাপাতালে যেতে হয়েছে সে পথ ধরেই নুসরাতের নিথর দেহ নিয়ে লাশবাহী গাড়ী তার আপন নীড়ে পৌছে। বাড়ীর উঠানে পৌছামাত্রই মানুষের আহাজরিতে হৃদয়বিদারক দৃশ্য অবতীর্ণ হয়। মানুষের ভীড় সামলাতে পুলিশকে বারবার বেগ পেতে হয়েছে। কে কাকে সান্তনা দিবে। নুসরাতের মুখখানা ছাড়া সমস্ত শরীর ক্ষত বিক্ষত হয়েছে আগুনের পুড়ায়। মুখখানা দেখে শোকার্তদের যেন এতটুকু শান্তনা লাগে। নীড় ছেড়ে যখন জানাজার জন্য প্রস্তুতকৃত মাঠে বিকেল সাড়ে ৫টায় পৌছায় তখন যেন হাজারো জনতার ভীড়। সোনাগাজী ঝাবের পাইলট হাইস্কুল মাঠে পাশবর্তী বিভিন্ন জেলার মানুষের সমাগত ভীড়ে কানায় কানায় পূর্ন হয়ে গেছে। যখন নিথর দেহ লাশবাহী গাড়ী আসল মানুষের বাবা কান্নায় বুক ভেসে গেছে। ভাই নোমান বোনের জন্য ক্ষমা চাইতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী নাসিম, জেলা পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গির আলম সরকার, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুর রহমানর কি.কম, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সখাপতি রুহুল আমিন সোনাগাজী পৌরমেয়র এডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন। বাবা হয়ে সন্তানের জানাজার ইমামতি করেন পিতা আবু মুসা।
উল্লেখ্য, ৬এপ্রিল যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদের কারণে গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয় নুসরাতকে। বুধবার সন্ধ্যা ঢাকা মেডিকেলে বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
পাঁচ দিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন নুসরাত। প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার নির্দেশ দিলেও শারীরিক অবস্থার কারণে তা সম্ভব হচ্ছিল না।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডাঃ সামন্ত লাল সেন।