ঢাকা ০৫:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫

বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখে, এটুকুই তৃপ্তি

আলোর জগত ডেস্ক :  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আজকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ্ববাসী বাংলাদেশের নাম শুনলে সম্মানের চোখে দেখে। এইটুকুই আমার তৃপ্তি। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে ২৫শে মার্চ, গণহত্যা দিবস। ইতোমধ্যে আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল, আমরা লাখো মানুষ হারিয়েছি। কাজেই এ দিনটি গণহত্যা দিবস হিসেবে যেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় সেটার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

তিনি বলেন, ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। এ দিবস আমরা আগামীকাল উদযাপন করব।

প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী অনির্বাচিত ও নির্বাচিত সরকারগুলোর সমালোচনা করে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এবং তা পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার আমলের দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সুফলটা যেন বাংলার জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারে। সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে এবং আর্থ সামাজিকভাবে আমরা উন্নত হতে পারি। উন্নত জাতি হিসাবে বিশ্বে যেন একটা মর্যাদা ফিরে পেতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করেছি। যার শুভফল দেশবাসী পেয়েছে। গত এক দশকে আজকের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্ববাসী একসময় বাংলাদেশের কথা শুনলেই বলত, দুর্ভিক্ষের দেশ, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ মনে করে অবহেলার চোখে দেখত।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ১৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের হাতে স্বাধীনতা পদক তুলে দেন।

এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জ্বল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ এটিএম জাফর আলম (মরণোত্তর), এ কে এম মোজাম্মেল হক, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. কাজী মিসবাহুন নাহার, আব্দুল খালেক (মরণোত্তর) ও অধ্যাপক মোহাম্মাদ খালেদ (মরণোত্তর), শওকত আলী খান (মরণোত্তর), চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজ সেবায় ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অধ্যাপক ড. হাসিনা খাঁন।

এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব এগ্রিকালচারকেও (বিআইএনএ) এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

শেখ হাসিনা ২৫ মার্চ কালরাতে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে জানান, এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে সরকার কাজ করছে। দেশের এবং প্রবাসে থাকা সব নাগরিককে সেজন্য চেষ্টা চালাতে অনুরোধ করেন তিনি।

যারা এবার স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন তাদের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। সবাইকে দেশের আর্তসামাজিক উন্নয়নে নিজ নিজ জায়গা থেকে আরও বেশি ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের পক্ষে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নিজের অনুভূতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহম্মদ শফিউল আলম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, বিচারপতিবৃন্দ, জাতীয় সংসদের সদসবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, বিদেশি কূটনিতিকবৃন্দ, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ কবি-সাহিত্যক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিবর্গসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখে, এটুকুই তৃপ্তি

আপডেট টাইম : ০৯:৫৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০১৯

আলোর জগত ডেস্ক :  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আজকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ্ববাসী বাংলাদেশের নাম শুনলে সম্মানের চোখে দেখে। এইটুকুই আমার তৃপ্তি। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে ২৫শে মার্চ, গণহত্যা দিবস। ইতোমধ্যে আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল, আমরা লাখো মানুষ হারিয়েছি। কাজেই এ দিনটি গণহত্যা দিবস হিসেবে যেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় সেটার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

তিনি বলেন, ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। এ দিবস আমরা আগামীকাল উদযাপন করব।

প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী অনির্বাচিত ও নির্বাচিত সরকারগুলোর সমালোচনা করে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এবং তা পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার আমলের দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সুফলটা যেন বাংলার জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারে। সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে এবং আর্থ সামাজিকভাবে আমরা উন্নত হতে পারি। উন্নত জাতি হিসাবে বিশ্বে যেন একটা মর্যাদা ফিরে পেতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করেছি। যার শুভফল দেশবাসী পেয়েছে। গত এক দশকে আজকের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্ববাসী একসময় বাংলাদেশের কথা শুনলেই বলত, দুর্ভিক্ষের দেশ, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ মনে করে অবহেলার চোখে দেখত।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ১৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের হাতে স্বাধীনতা পদক তুলে দেন।

এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জ্বল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ এটিএম জাফর আলম (মরণোত্তর), এ কে এম মোজাম্মেল হক, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. কাজী মিসবাহুন নাহার, আব্দুল খালেক (মরণোত্তর) ও অধ্যাপক মোহাম্মাদ খালেদ (মরণোত্তর), শওকত আলী খান (মরণোত্তর), চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজ সেবায় ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অধ্যাপক ড. হাসিনা খাঁন।

এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব এগ্রিকালচারকেও (বিআইএনএ) এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

শেখ হাসিনা ২৫ মার্চ কালরাতে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে জানান, এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে সরকার কাজ করছে। দেশের এবং প্রবাসে থাকা সব নাগরিককে সেজন্য চেষ্টা চালাতে অনুরোধ করেন তিনি।

যারা এবার স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন তাদের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। সবাইকে দেশের আর্তসামাজিক উন্নয়নে নিজ নিজ জায়গা থেকে আরও বেশি ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের পক্ষে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নিজের অনুভূতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহম্মদ শফিউল আলম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, বিচারপতিবৃন্দ, জাতীয় সংসদের সদসবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, বিদেশি কূটনিতিকবৃন্দ, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ কবি-সাহিত্যক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিবর্গসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।