আলোর জগত ডেস্কঃ রাজধানীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে নিউমার্কেট-আজিমপুর-ধানমন্ডি রুটে চালু হতে যাচ্ছে আধুনিক চক্রাকার বাস সার্ভিস। আগামী ২৬ মার্চ থেকে এ সার্ভিসটি শুরু হবে। গতকাল বুধবার নগর ভবনে মেয়রের সভাকক্ষে রাজধানীতে বাস রুট রেশনালাইজেশন করতে গঠিত কমিটির চতুর্থ সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্ত জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।
তিনি বলেন, চক্রাকার এ বাস সার্ভিসে বিআরটিসির ২০-২৫টি বাস থাকবে। এতে ৩৬টি স্পট করে দেওয়া হবে। এসব স্পটে বাসগুলো এসে নির্ধারিত সময়ের জন্য অপেক্ষা করবে। এসব কাউন্টারে প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর অন্তর একটি করে বাস আসবে। এসব বাস যাত্রী তোলা শেষে কাউন্টার ত্যাগ করবে। বাসের ভাড়া বিআরটিসির রুল অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। সেই সঙ্গে এ সার্ভিসের ফলে ওই এলাকায় যেসব ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ পরিবহন চলাচল করছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে অপসারণ করা হবে।
নিউমার্কেট-আজিমপুর-ধানমন্ডি বাস সার্ভিসের রুট:
১। আজিমপুর-নিউমার্কেট-সাইন্সল্যাব-ধানমনন্ডি ২ নম্বর রোড, সাত মসজিদ রোড (ঝিগাতলা, সংকর), ধানমন্ডি ২৭, সোবহানবাগ, রাসেল স্কোয়ার, কলাবাগান, সাইন্সল্যাব, বাটা ক্রসিং, কাটাবন, নীলক্ষেত, পলাশী হয়ে আবারও আজিমপুর যাবে বাসটি।
২। সোবহানবাগ-রাসেল স্কোয়ার, কলাবাগান, সাইন্সল্যাব-বাটা ক্রসিং, কাটাবন-নীলক্ষেত, পলাশী, আজিমপুর, নিউমার্কেট, সাইন্সল্যাব, কলাবাগান, সোবহানবাগ, ২৭ নম্বর রোড পূর্ব মাথা থেকে পশ্চিম মাথা, সাত মসজিদ রোড, বিজিবি ২ নম্বর গেইট, ৩ নম্বর রোড ইউটার্ন-সাইন্সল্যাব-বাটা ক্রসিং-কাটাবন, নীলক্ষেত, পলাশী, আজিমপুর হয়ে বাসটি আবারও নিউমার্কেট যাবে।
যেভাবে চলবে চক্রাকার বাস:
চক্রাকারভাবে চলাচল করা এই বাসগুলোতে দুইটি দরজা থাকবে। একই সময় যাত্রীরা সামনের দরজা দিয়ে উঠবেন এবং পেছনের দরজা দিয়ে নামবেন। নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিটি সংগ্রহ করে লাইনে দাঁড়িয়ে বাসে উঠবেন যাত্রীগণ। বাস আসবে ৫/১০ মিনিট পর পর। এই বাস চলাচল করায় একই স্থানে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার প্রয়োজন পড়বে না যাত্রীর।
রাজধানীর এই এলাকাগুলোতে রয়েছে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং মল আর হাসপাতাল। এ কারণে সেখানে অনেকেই প্রাইভেটকার নিয়ে আসেন। আর এ জন্য ওই এলাকায় প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও যানজট সৃষ্টি হওয়ার অন্যতম কারণ সড়কে প্রচুর রিকশা।
চক্রাকার বাসের সুবিধা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, বাস স্টপেজে অল্প সময় পর পর বাস আসার কারণে যাত্রীরা অল্প দূরত্বে বাসের মাধ্যমেই যাতায়াত করতে পারবেন। রিকশার তুলনায় বাস ভাড়াও কম হবে। আর এতে কমবে যানজট। টিকিট সিস্টেম হওয়ায় সুবিধা হবে যাত্রী এবং পথচারীদের। এসি বাস হওয়ায় ধুলাবালির সমস্যা থাকবে না। ওই এলাকায় স্কুলে যাওয়ার জন্য যে সকল স্কুল শিক্ষার্থী গাড়ি ব্যবহার করত তারা কম ভাড়াতে বাসেই যাতায়াত করতে পারবে।
রাজধানীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে গত বছর সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তার মাধ্যমেই স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ১০ সদস্যের এই কমিটি গঠন করে। কমিটিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে আহ্বায়ক করা হয়।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, রাজউক চেয়ারম্যান, ডিএমপি কমিশনার, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক।