ঢাকা ০৪:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

লালবাগে সম্মেলন সফল করতে ২৬ নং ওয়ার্ডে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আব্দুল্লাহ আল মামুন:

 

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ থানা এবং থানাধীন ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে পুরো এলাকাজুড়ে এক রাজনৈতিক উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করছে। থানাধীন ৪ টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন ইউনিট এলাকায় চায়ের দোকান, হোটেল-রেস্তোরা ও বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে আলোচনা ও গুঞ্জন অবিরাম চলছে। এবারের থানা আওয়ামী লীগ এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি কিংবা সাধারন সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে কে বা কারা থাকছেন, সে বিষয়ে এলাকার সাধারন জনগনের মাঝেও বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। লালবাগ থানাথীন নবাবগঞ্জ পার্কে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলন সফলভাবে উদযাপনকে কেন্দ্র করে গত ১২ সেপ্টেম্বর, সোমবার সন্ধ্যায় চৌধুরী বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান বাবলার উদ্যোগে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ওয়ার্ড সভাপতি থেকে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুর রহমান বাবলার সভাপতিত্বে এবং ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মতিউর রহমান মিনারের সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. দুলাল বলেন, ‘১৯৮৪ সালে লালবাগ থানধীন বিভিন্ন এলাকা যখন ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন ছিল, তখন থেকেই আমি আজিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে কাজ করে আসছি। তিনি বলেন, ‘আমি তৎকালীন আজিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য ছিলাম। পরবর্তীতে লালবাগ থানাধীন ২৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, সাবেক ৬২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরে লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। দুর্দিনে যখন আওয়ামী লীগের হয়ে কথা বলা যেত না, তখন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সেমিনার সফল করতে আমি মাইকিং করতাম। আর ঐ সময় এ কাজ করতে গিয়ে আমি বহু জায়গায় মার খেয়েছি, হেনস্তা হয়েছি, এমনকি জেল পর্যন্ত খেটেছি। তবুও পিছপা হই নাই, আওয়ামী লীগ ছাড়ি নাই।’ এই ওয়ার্ড নেতা আরো বলেন, ‘কোনদিন নেতা হতে চাইনি, নেতা বানাতে চেয়েছি। তবে বছর খানেক পূর্বে জালাল ভাইয়ের (ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন) বাসায় এক ঘরোয়া বৈঠকে ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলাম। এবারের সম্মেলনে পদ পাই বা না পাই তাতে কোনো আপত্তি থাকবে না। যেই আসুক, ভালো কোনো লোক আসুক। তার নেতৃত্বেই কাজ করবো। তবে কোনো হাইব্রীড কাউয়া, যারা আজকে চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে তাদেরকে যদি নেতা বানানো হয়, অন্তত ঐদিকে আমরা রাজনৈতিক ছাড় দিব না।’
সভায় সদ্য পরলোক গমনকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সংসদ উপনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ২৬ নং ওয়ার্ড আহŸায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মো. মোশারফ হোসেন পাপ্পু বলেন, ‘সম্মেলন হল একটি উৎসব। এই উৎসবমূখর পরিবেশে কেউ হাতি-ঘোড়া নিয়ে যাবে, কেউ যাবে ডাক-ঢোল নিয়ে। আমরা ব্যানার-ফেষ্টুন নিয়ে যাই, কত কত লোক নিয়ে যাই। কিন্তু আমারা যা কিছু করিনা কেন, তা সংগঠনের জন্যেই করি।’ দলের এই কর্মী বলেন, ‘বিগত দিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় দেখেছি, অনেকেই আছেন যারা সংগঠনের জন্য কিছুই করেন না, করেন নিজস্ব বলয় তৈরী করার জন্য। নেতারা চিন্তা করে কে আমার! যে আমার তাকে আমি দায়িত্বটা দিয়ে যাবো। নেতার অনুগত লোক ছাড়া যদি কমিটি না হয়, তাহলে সেই সংগঠন কোনো সুফল বয়ে আনবে না, সেই সংগঠন করে কোনো লাভ নাই।’ তাই আগামীতে যারা নেতৃত্বে আসবেন, তাদেরকে ব্যক্তির দিকে না দেখে সংগঠনকে ভালোবেসে কাজ করার আহŸান জানান তৃণমূলের এই আওয়ামী লীগ কর্মী।
২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক সদস্য মো. সেলিম বলেন, আমাদের দীর্ঘ দিনের আশা, ২৬ নং ওয়ার্ডে ভালো নেতৃত্ব আসুক। ১৯ বছর পর সম্মেলন হতে যাচ্ছে। কতটা পথ আমরা পাড়ি দিয়েছি। এই দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর যদি দেখা যায় যে, আমরা নেতৃত্বে আগাছা, হাইব্রীড আর চাঁদাবাজদের পাই, তাহলে সেটা হবে আমাদের জন্য দূর্ভাগ্য। আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, বৃহত্তর লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এ.বি.এম মজিবুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক মো. নূরু, থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. আলী, মো. তপন ও মাহবুবুল আলম সেলিম প্রমুখ। সভায় বক্তাদের বক্তব্যে সম্মেলনকে সফলভাবে উদযাপনের ইচ্ছে এবং এর মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা পাবে, সেই অভিলাষ প্রকাশ পেয়েছে।
সমাপনী বক্তব্যে সভাপতির ভাষণে আব্দুর রহমান বাবলা ২৬ নং ওয়ার্ডের পক্ষ থেকে সকলকে বিপ্লবী শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে ২০ সেপ্টেম্বরের সম্মেলনকে কিভাবে সফল করা যায়, সে বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এই ২৬ নম্বর ওয়ার্ডকে পলাশী ও লালবাগ এলাকা নিয়ে একটা অংশ, ছাপড়া মসজিদ এলাকা একটা অংশ, রসুলবাগ এলাকা একটা অংশ এবং বটতলা একটা অংশসহ মোট ৪ ভাগে বিভক্ত করেছি।’ ওয়ার্ডের এই ৪ টি এলাকাংশ থেকে সকলকে সু-শৃংখলভাবে মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে পৌঁছতে হবে। ওয়ার্ডের বিভিন্ন ইউনিটের তৃণমূল নেতা-কর্মীসহ এ সমস্ত মিছিলের দায়িত্বে ও নেতৃত্বে যারা থাকবেন, তাদের নাম উল্লেখ করে এই নেতা আগামীকাল থেকে সকলকে মাঠে নেমে সম্মেলনকে সফল করতে গণসংযোগ করার আহŸান জানান। উল্লেখ্য, থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী অব্দুর রহমান বাবলা এর আগে আজিমপুর ইউনিয়ন ছাত্র লীগের সাধারন সম্পাদক, বৃহত্তর লালবাগ থানা ছাত্র লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, বৃহত্তর লালবাগ থানা ছাত্র লীগের সভাপতি ও ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার একটাই বক্তব্য, আর তা হচ্ছে দলের ভালো চাই আমি। যাকেই পদ দেয়া হোক, সে যেন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে। তার দ্বারা যেন দলের ও জননেত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন না হয়, এটাই আমার চাওয়া।’ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায, এবার লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী ৪ জন ও সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থীও রয়েছেন ৪ জন। আর ২৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী মিলে মোট রয়েছেন ৮ জন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা যেমন রয়েছেন তেমনি দলের সু-সময়ে আগমনকারী এবং নেতৃত্ব দেয়ার মত যোগ্য ব্যক্তিবর্গরাও রয়েছেন বলে জানা যায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার একটি নির্দেশনা রয়েছে এমন যে, “রাজনীতি অর্থ উপার্জনের কোন মেশিন নয়। রাজনীতির মাঠে তাদেরকেই সুযোগ করে দিতে হবে যারা সুশিক্ষিত, সৎ, বিশ্বস্ত ও দলের প্রতি কমিটেড এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য একটা পেশা আছে। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে, তদবির করে রাতারাতি কোটিপতি হবার স্বপ্ন নিয়ে যারা রাজনীতিতে আসে, তাদের পরিত্যাগ করুন।” এখন সময়ই বলে দিবে লালবাগ থানা এবং থানার আওতাধীন ওয়ার্ডগুলোতে বহুল কাঙ্খিত আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এই চেয়ারগুলোতে বসার যোগ্যতা সম্পন্ন ও সৌভাগ্যবান মানুষগুলো কারা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

লালবাগে সম্মেলন সফল করতে ২৬ নং ওয়ার্ডে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট টাইম : ১১:৩৫:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

আব্দুল্লাহ আল মামুন:

 

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ থানা এবং থানাধীন ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে পুরো এলাকাজুড়ে এক রাজনৈতিক উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করছে। থানাধীন ৪ টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন ইউনিট এলাকায় চায়ের দোকান, হোটেল-রেস্তোরা ও বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে আলোচনা ও গুঞ্জন অবিরাম চলছে। এবারের থানা আওয়ামী লীগ এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি কিংবা সাধারন সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে কে বা কারা থাকছেন, সে বিষয়ে এলাকার সাধারন জনগনের মাঝেও বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। লালবাগ থানাথীন নবাবগঞ্জ পার্কে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলন সফলভাবে উদযাপনকে কেন্দ্র করে গত ১২ সেপ্টেম্বর, সোমবার সন্ধ্যায় চৌধুরী বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান বাবলার উদ্যোগে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ওয়ার্ড সভাপতি থেকে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুর রহমান বাবলার সভাপতিত্বে এবং ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মতিউর রহমান মিনারের সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. দুলাল বলেন, ‘১৯৮৪ সালে লালবাগ থানধীন বিভিন্ন এলাকা যখন ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন ছিল, তখন থেকেই আমি আজিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে কাজ করে আসছি। তিনি বলেন, ‘আমি তৎকালীন আজিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য ছিলাম। পরবর্তীতে লালবাগ থানাধীন ২৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, সাবেক ৬২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরে লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। দুর্দিনে যখন আওয়ামী লীগের হয়ে কথা বলা যেত না, তখন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সেমিনার সফল করতে আমি মাইকিং করতাম। আর ঐ সময় এ কাজ করতে গিয়ে আমি বহু জায়গায় মার খেয়েছি, হেনস্তা হয়েছি, এমনকি জেল পর্যন্ত খেটেছি। তবুও পিছপা হই নাই, আওয়ামী লীগ ছাড়ি নাই।’ এই ওয়ার্ড নেতা আরো বলেন, ‘কোনদিন নেতা হতে চাইনি, নেতা বানাতে চেয়েছি। তবে বছর খানেক পূর্বে জালাল ভাইয়ের (ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন) বাসায় এক ঘরোয়া বৈঠকে ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলাম। এবারের সম্মেলনে পদ পাই বা না পাই তাতে কোনো আপত্তি থাকবে না। যেই আসুক, ভালো কোনো লোক আসুক। তার নেতৃত্বেই কাজ করবো। তবে কোনো হাইব্রীড কাউয়া, যারা আজকে চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে তাদেরকে যদি নেতা বানানো হয়, অন্তত ঐদিকে আমরা রাজনৈতিক ছাড় দিব না।’
সভায় সদ্য পরলোক গমনকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সংসদ উপনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ২৬ নং ওয়ার্ড আহŸায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মো. মোশারফ হোসেন পাপ্পু বলেন, ‘সম্মেলন হল একটি উৎসব। এই উৎসবমূখর পরিবেশে কেউ হাতি-ঘোড়া নিয়ে যাবে, কেউ যাবে ডাক-ঢোল নিয়ে। আমরা ব্যানার-ফেষ্টুন নিয়ে যাই, কত কত লোক নিয়ে যাই। কিন্তু আমারা যা কিছু করিনা কেন, তা সংগঠনের জন্যেই করি।’ দলের এই কর্মী বলেন, ‘বিগত দিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় দেখেছি, অনেকেই আছেন যারা সংগঠনের জন্য কিছুই করেন না, করেন নিজস্ব বলয় তৈরী করার জন্য। নেতারা চিন্তা করে কে আমার! যে আমার তাকে আমি দায়িত্বটা দিয়ে যাবো। নেতার অনুগত লোক ছাড়া যদি কমিটি না হয়, তাহলে সেই সংগঠন কোনো সুফল বয়ে আনবে না, সেই সংগঠন করে কোনো লাভ নাই।’ তাই আগামীতে যারা নেতৃত্বে আসবেন, তাদেরকে ব্যক্তির দিকে না দেখে সংগঠনকে ভালোবেসে কাজ করার আহŸান জানান তৃণমূলের এই আওয়ামী লীগ কর্মী।
২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক সদস্য মো. সেলিম বলেন, আমাদের দীর্ঘ দিনের আশা, ২৬ নং ওয়ার্ডে ভালো নেতৃত্ব আসুক। ১৯ বছর পর সম্মেলন হতে যাচ্ছে। কতটা পথ আমরা পাড়ি দিয়েছি। এই দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর যদি দেখা যায় যে, আমরা নেতৃত্বে আগাছা, হাইব্রীড আর চাঁদাবাজদের পাই, তাহলে সেটা হবে আমাদের জন্য দূর্ভাগ্য। আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, বৃহত্তর লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এ.বি.এম মজিবুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক মো. নূরু, থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. আলী, মো. তপন ও মাহবুবুল আলম সেলিম প্রমুখ। সভায় বক্তাদের বক্তব্যে সম্মেলনকে সফলভাবে উদযাপনের ইচ্ছে এবং এর মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা পাবে, সেই অভিলাষ প্রকাশ পেয়েছে।
সমাপনী বক্তব্যে সভাপতির ভাষণে আব্দুর রহমান বাবলা ২৬ নং ওয়ার্ডের পক্ষ থেকে সকলকে বিপ্লবী শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে ২০ সেপ্টেম্বরের সম্মেলনকে কিভাবে সফল করা যায়, সে বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এই ২৬ নম্বর ওয়ার্ডকে পলাশী ও লালবাগ এলাকা নিয়ে একটা অংশ, ছাপড়া মসজিদ এলাকা একটা অংশ, রসুলবাগ এলাকা একটা অংশ এবং বটতলা একটা অংশসহ মোট ৪ ভাগে বিভক্ত করেছি।’ ওয়ার্ডের এই ৪ টি এলাকাংশ থেকে সকলকে সু-শৃংখলভাবে মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে পৌঁছতে হবে। ওয়ার্ডের বিভিন্ন ইউনিটের তৃণমূল নেতা-কর্মীসহ এ সমস্ত মিছিলের দায়িত্বে ও নেতৃত্বে যারা থাকবেন, তাদের নাম উল্লেখ করে এই নেতা আগামীকাল থেকে সকলকে মাঠে নেমে সম্মেলনকে সফল করতে গণসংযোগ করার আহŸান জানান। উল্লেখ্য, থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী অব্দুর রহমান বাবলা এর আগে আজিমপুর ইউনিয়ন ছাত্র লীগের সাধারন সম্পাদক, বৃহত্তর লালবাগ থানা ছাত্র লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, বৃহত্তর লালবাগ থানা ছাত্র লীগের সভাপতি ও ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার একটাই বক্তব্য, আর তা হচ্ছে দলের ভালো চাই আমি। যাকেই পদ দেয়া হোক, সে যেন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে। তার দ্বারা যেন দলের ও জননেত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন না হয়, এটাই আমার চাওয়া।’ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায, এবার লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী ৪ জন ও সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থীও রয়েছেন ৪ জন। আর ২৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী মিলে মোট রয়েছেন ৮ জন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা যেমন রয়েছেন তেমনি দলের সু-সময়ে আগমনকারী এবং নেতৃত্ব দেয়ার মত যোগ্য ব্যক্তিবর্গরাও রয়েছেন বলে জানা যায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার একটি নির্দেশনা রয়েছে এমন যে, “রাজনীতি অর্থ উপার্জনের কোন মেশিন নয়। রাজনীতির মাঠে তাদেরকেই সুযোগ করে দিতে হবে যারা সুশিক্ষিত, সৎ, বিশ্বস্ত ও দলের প্রতি কমিটেড এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য একটা পেশা আছে। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে, তদবির করে রাতারাতি কোটিপতি হবার স্বপ্ন নিয়ে যারা রাজনীতিতে আসে, তাদের পরিত্যাগ করুন।” এখন সময়ই বলে দিবে লালবাগ থানা এবং থানার আওতাধীন ওয়ার্ডগুলোতে বহুল কাঙ্খিত আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এই চেয়ারগুলোতে বসার যোগ্যতা সম্পন্ন ও সৌভাগ্যবান মানুষগুলো কারা।