ঢাকা ০৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর সন্ত্রাসী জামাই কর্তৃক হামলা : শ্বশুর আহত

মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর
মুক্তিযোদ্ধা  পরিবারের উপর সন্ত্রাসী জামাই শাহজামালের দা এর কোপে শ্বশুর আশ্রাব আলী আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১০জুলাই শনিবার বিকেলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নে রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে। বর্তমানে আহত আশ্রাব আলী শেরপুর সদর হাসপাতালে মৃত্যুের সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এ ঘটনায় শাহজামাল সহ ৪ব্যক্তির নামে ঝিনাইগাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান আফসানা মিমি বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মেম্বারের ছেলে শাহজামাল ও তার বন্ধুরা  মিলে আফসানাকে অপহরণ করে। আফসানার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আশ্রাব আলী বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় একটি অপরণ মামলা দায়ের করেন। অবস্থার বেগতিক দেখে শাহজামাল আত্মগোপনে চলে গিয়ে আফসানা মিমিকে জোর পূর্বক  বিবাহ করেন।
পরবর্তীতে আফসানার পরিবার তাদের বিবাহকে স্বীকৃতি দিয়ে অপহরণ মামলা প্রত্যাহার করেন।
 কিছু দিন উভয় পরিবারের মাঝে সু-সর্ম্পক থাকলেও যৌতুকের করাল গ্রাসে তাদের সর্ম্পকের ফাটল ধরতে থাকে। মেয়ের সুখের জন্য আফসানার বাবা আশ্রাব আলী সাধ্যমত সাহায্য- সহযোগীতা করলেও লোভী জামাই শাহজামালের পরিবারের মন না ভরায় শুরু করে আফসানার উপর যৌতুকের চাপ আর শারিরীক নির্যাতন।
অপরদিকে প্রথমা স্ত্রী আফসানা মিমির অনুমতি ছাড়াই আরেকটি বিবাহ করে শাহজামাল। ২সন্তানের জননী আফসানা মিসি স্বামীর বাড়ীর নির্যাতন সইতে না পেরে একই গ্রামে বাবা বাড়ীতে চলে এসে স্বামী শাহজামালের বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন।  গত কয়েকদিন পূর্বে আদালত শাহজামালের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। স্ত্রী আফসানা মিমি কর্তৃক মামলা দায়েরের কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজামাল শ্বশুর বাড়ীতে এসে আফসানাকে মারপিট শুরু করেন। মেয়েকে বাঁচাতে গেলে হত্যার উদ্দেশে শ্বশুর আশ্রাব আলীর মাথায় দা দিয়ে শাহজামাল কুপ দেয়। ঘটনাস্থলেই আশ্রাব আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
আশ্রাবের স্বজনরা আশ্রাবকে উদ্ধার করে শেরপুর সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে পূনরায় শাহজামালের বাড়ীর সন্মুখে আক্রমন করে শাহজামাল সহ তার পরিবারের লোকজন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী আবু বক্কর, বাচ্চু মিয়া, আব্দুল বারেক, নুরনবী, আনছার আলী সহ আরো অনেকে এ প্রতিনিধিকে জানান, রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের রাজ্জাক মেম্বারের ছেলে শাহজামাল অনেক ঘটনার নায়ক। সে একের পর এক অপরাধ তার স্ত্রীর ও শ্বশুরের সাথে করেছেন। সর্বশেষ শ্বশুর আশ্রাবকে হত্যার উদ্দেশে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করা কোন ভাবেই কাম্য নয়। আমরা এর সুষ্ট বিচার চাই।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুদ রানা জানান, ঘটনাস্থল তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেছে। শাহজামাল সহ অন্যান্য আসামীদে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।
ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নাতি ও ২ সন্তানের জননী আফসানা মিমি তার  উপর অমানবিক অত্যাচার এবং তার বাবাকে হত্যার উদ্দেশে হামলার ন্যায় বিচারের দাবী জানান।
আফসানা মিমির বাবা আশ্রাব আলী জানান, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমি আমার মেয়ের সুখের জন্য সব কিছু বির্সজন দিয়েও শাহজামালের পরিবারের কাছে আমি বারংবার হামলার শিকার হয়েছি। আমার মেয়েকে আমারই বাড়ীতে এসে মারধর শুরু করলে আমি আমি মেয়েকে বাঁচাতে যাই। সে কারণে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলতেও দিধাবোধ করেনি শাহজামাল। আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে শাহজামালের বিচার দাবী করছি।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর সন্ত্রাসী জামাই কর্তৃক হামলা : শ্বশুর আহত

আপডেট টাইম : ১২:২৩:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১
মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর
মুক্তিযোদ্ধা  পরিবারের উপর সন্ত্রাসী জামাই শাহজামালের দা এর কোপে শ্বশুর আশ্রাব আলী আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১০জুলাই শনিবার বিকেলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নে রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে। বর্তমানে আহত আশ্রাব আলী শেরপুর সদর হাসপাতালে মৃত্যুের সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এ ঘটনায় শাহজামাল সহ ৪ব্যক্তির নামে ঝিনাইগাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান আফসানা মিমি বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মেম্বারের ছেলে শাহজামাল ও তার বন্ধুরা  মিলে আফসানাকে অপহরণ করে। আফসানার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আশ্রাব আলী বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় একটি অপরণ মামলা দায়ের করেন। অবস্থার বেগতিক দেখে শাহজামাল আত্মগোপনে চলে গিয়ে আফসানা মিমিকে জোর পূর্বক  বিবাহ করেন।
পরবর্তীতে আফসানার পরিবার তাদের বিবাহকে স্বীকৃতি দিয়ে অপহরণ মামলা প্রত্যাহার করেন।
 কিছু দিন উভয় পরিবারের মাঝে সু-সর্ম্পক থাকলেও যৌতুকের করাল গ্রাসে তাদের সর্ম্পকের ফাটল ধরতে থাকে। মেয়ের সুখের জন্য আফসানার বাবা আশ্রাব আলী সাধ্যমত সাহায্য- সহযোগীতা করলেও লোভী জামাই শাহজামালের পরিবারের মন না ভরায় শুরু করে আফসানার উপর যৌতুকের চাপ আর শারিরীক নির্যাতন।
অপরদিকে প্রথমা স্ত্রী আফসানা মিমির অনুমতি ছাড়াই আরেকটি বিবাহ করে শাহজামাল। ২সন্তানের জননী আফসানা মিসি স্বামীর বাড়ীর নির্যাতন সইতে না পেরে একই গ্রামে বাবা বাড়ীতে চলে এসে স্বামী শাহজামালের বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন।  গত কয়েকদিন পূর্বে আদালত শাহজামালের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। স্ত্রী আফসানা মিমি কর্তৃক মামলা দায়েরের কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজামাল শ্বশুর বাড়ীতে এসে আফসানাকে মারপিট শুরু করেন। মেয়েকে বাঁচাতে গেলে হত্যার উদ্দেশে শ্বশুর আশ্রাব আলীর মাথায় দা দিয়ে শাহজামাল কুপ দেয়। ঘটনাস্থলেই আশ্রাব আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
আশ্রাবের স্বজনরা আশ্রাবকে উদ্ধার করে শেরপুর সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে পূনরায় শাহজামালের বাড়ীর সন্মুখে আক্রমন করে শাহজামাল সহ তার পরিবারের লোকজন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী আবু বক্কর, বাচ্চু মিয়া, আব্দুল বারেক, নুরনবী, আনছার আলী সহ আরো অনেকে এ প্রতিনিধিকে জানান, রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের রাজ্জাক মেম্বারের ছেলে শাহজামাল অনেক ঘটনার নায়ক। সে একের পর এক অপরাধ তার স্ত্রীর ও শ্বশুরের সাথে করেছেন। সর্বশেষ শ্বশুর আশ্রাবকে হত্যার উদ্দেশে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করা কোন ভাবেই কাম্য নয়। আমরা এর সুষ্ট বিচার চাই।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুদ রানা জানান, ঘটনাস্থল তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেছে। শাহজামাল সহ অন্যান্য আসামীদে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।
ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নাতি ও ২ সন্তানের জননী আফসানা মিমি তার  উপর অমানবিক অত্যাচার এবং তার বাবাকে হত্যার উদ্দেশে হামলার ন্যায় বিচারের দাবী জানান।
আফসানা মিমির বাবা আশ্রাব আলী জানান, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমি আমার মেয়ের সুখের জন্য সব কিছু বির্সজন দিয়েও শাহজামালের পরিবারের কাছে আমি বারংবার হামলার শিকার হয়েছি। আমার মেয়েকে আমারই বাড়ীতে এসে মারধর শুরু করলে আমি আমি মেয়েকে বাঁচাতে যাই। সে কারণে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলতেও দিধাবোধ করেনি শাহজামাল। আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে শাহজামালের বিচার দাবী করছি।