ঢাকা ০১:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ঝিনাইগাতীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বৃদ্ধা নারী মেহেরী বেগমকে পাশবিক নির্যাতন

 মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি :
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বৃদ্ধা নারী মেহেরী বেগমকে পাশবিক নির্যাতন করে গুরুতর ভাবে রক্তাক্ত ও জখম করার অভিয়োগ উঠেছে। মেহেরী বেগম(৫৫) তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে  আঘাতের ভীষন যন্ত্রণা আর ভেঙ্গে যাওয়া পায়ের ব্যথা নিয়ে কাতরাচ্ছে ঝিনাইগাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডের ১১নং বেডে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৮জুন সোমবার সকাল আনুমানিক ৬ ঘটিকার সময়।
বাদীর দায়ের করা অভিযোগ ও এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের উত্তর রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে মো. আব্দুল জব্বারের স্ত্রী মোছা. মেহেরী বেগম। মেহেরী বেগমের স্বামী ও তার এক ছেলে ঢাকায় কাজ করেন। ওই বৃদ্ধা মেহেরী বেগম একাই তার গ্রামের বাড়ীতে বসবাস করেন।
মেহেরী বেগমের সীমানা ঘেষে প্রতিবেশী মৃত আবুল কাশেমের ৩ ছেলে হাবিবুর রহমান হবি(৪০), হুরমুজ আলী(৩০) ও মো. সাইফুল ইসলাম(২৫)এর সাথে মেহেরী বেগমের স্বামীর সাথে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। মাঝে মধ্যেই হবিগংরা ওই বৃদ্ধার বসতবাড়ী জবর দখলের চেষ্টা সহ গাছপালা কেটে ফেলে। এসব বিরোধের জের ধরে গত ২৮জুন সোমবার সকাল আনুমানিক ৬ঘটিকার দিকে সাইফুল ইসলাম(২৫) ওই বৃদ্ধার ঘরের কোণে ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রশ্রাব করতে বসে। বৃদ্ধা মেহেরী বেগম তার ঘরের সামনে প্রশ্রাব করার প্রতিবাদ করলে, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে
হাবিবুর রহমান হবি(৪০), হুরমুজ আলী(৩০) ও মো. সাইফুল ইসলাম(২৫)  বৃদ্ধা মেহেরী বেগমকে একা পেয়ে অমানুসিকভাবে নির্যাতন চালায়। তারা পরিকল্পিতভাবে ঐ বৃদ্ধার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করে। তাদের আঘাতে মেহেরি বেগমের ডান পায়ের গোড়ালি ভেঙে যায়।
হবি গংদের ধারণা ছিল, ঐ বৃদ্ধার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর  স্থানে আঘাত করলে, ওই মহিলা লজ্জায় কাউকে দেখাতে পারবে না। ফলে তাদের আর কিছুই হবে না। এই ভেবে ওই বৃদ্ধাকে রক্তাক্ত জখম এবং মারাত্মক ভাবে  আহত করে হবিগংরা তাদের নিজ ঘরে ফিরে আসে। পরে বৃদ্ধা মেহেরী বেগম প্রতিবেশীদের সহযোগিতা নিয়ে ঝিনাইগাতী হাসপাতাল ভর্তি হন।
মেহেরী বেগম বর্তমানে ঝিনাইগাতী হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডের ১১নম্বর বেডে শরীরের  অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। অপরদিকে প্রভাবশালী ও মারধরকারী হবিগংরা বুক ফুঁলিয়ে এলাকায় বিচরণ করলেও তাদের ভয়ে কেহ মুখ খোলতে সাহস পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে নিযার্তনের শিকার মেহেরী বেগমের ছেলে ইয়াছিন(৩০) ঢাকা থেকে এসে  ঝিনাইগাতী থানায় ঝিনাইগাতী থানায় ৩ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
নির্যাতিত নারী মেহেরী বেগম জানান, আমার স্বামী কখনো আমার গায়ে হাত তুলেনি। আমার ঘরের সামনে প্রশ্রাব করার প্রতিবাদ করায় পরপুরুষ হয়ে হবি,হুরমুজ ও সাইফুল এই ৩ভাই মিলে আমাকে একা পেয়ে মাটিতে ফেলে শরীরের বিভিন্ন গোপন স্থানে মারধর করেছে। তাদের আঘাতে আমার ডান পায়ের ঘিরার উপরে ২টি হাড় ভেঙ্গে গেছে। আমি এ জঘন্য অপরাধের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার চাই।
ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এসআই মাসুদুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছি।
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুদ রানা জানান, অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়েছি। আসামীরা পালিয়ে থাকায় তাদেরকে গ্রেপ্তার সম্ভব হচ্ছে না। অভিযান অব্যাহত আছে।
জঘন্যতম এ অপরাদের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের কঠিনতম শাস্তির দাবী জানান নির্যাতিতা বৃদ্ধা মেহেরী বেগমের ছেলে ও অত্র মামলার বাদী মো. ইয়াছিন আলী।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

ঝিনাইগাতীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বৃদ্ধা নারী মেহেরী বেগমকে পাশবিক নির্যাতন

আপডেট টাইম : ০৪:১১:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুলাই ২০২১
 মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি :
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বৃদ্ধা নারী মেহেরী বেগমকে পাশবিক নির্যাতন করে গুরুতর ভাবে রক্তাক্ত ও জখম করার অভিয়োগ উঠেছে। মেহেরী বেগম(৫৫) তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে  আঘাতের ভীষন যন্ত্রণা আর ভেঙ্গে যাওয়া পায়ের ব্যথা নিয়ে কাতরাচ্ছে ঝিনাইগাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডের ১১নং বেডে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৮জুন সোমবার সকাল আনুমানিক ৬ ঘটিকার সময়।
বাদীর দায়ের করা অভিযোগ ও এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের উত্তর রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে মো. আব্দুল জব্বারের স্ত্রী মোছা. মেহেরী বেগম। মেহেরী বেগমের স্বামী ও তার এক ছেলে ঢাকায় কাজ করেন। ওই বৃদ্ধা মেহেরী বেগম একাই তার গ্রামের বাড়ীতে বসবাস করেন।
মেহেরী বেগমের সীমানা ঘেষে প্রতিবেশী মৃত আবুল কাশেমের ৩ ছেলে হাবিবুর রহমান হবি(৪০), হুরমুজ আলী(৩০) ও মো. সাইফুল ইসলাম(২৫)এর সাথে মেহেরী বেগমের স্বামীর সাথে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। মাঝে মধ্যেই হবিগংরা ওই বৃদ্ধার বসতবাড়ী জবর দখলের চেষ্টা সহ গাছপালা কেটে ফেলে। এসব বিরোধের জের ধরে গত ২৮জুন সোমবার সকাল আনুমানিক ৬ঘটিকার দিকে সাইফুল ইসলাম(২৫) ওই বৃদ্ধার ঘরের কোণে ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রশ্রাব করতে বসে। বৃদ্ধা মেহেরী বেগম তার ঘরের সামনে প্রশ্রাব করার প্রতিবাদ করলে, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে
হাবিবুর রহমান হবি(৪০), হুরমুজ আলী(৩০) ও মো. সাইফুল ইসলাম(২৫)  বৃদ্ধা মেহেরী বেগমকে একা পেয়ে অমানুসিকভাবে নির্যাতন চালায়। তারা পরিকল্পিতভাবে ঐ বৃদ্ধার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করে। তাদের আঘাতে মেহেরি বেগমের ডান পায়ের গোড়ালি ভেঙে যায়।
হবি গংদের ধারণা ছিল, ঐ বৃদ্ধার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর  স্থানে আঘাত করলে, ওই মহিলা লজ্জায় কাউকে দেখাতে পারবে না। ফলে তাদের আর কিছুই হবে না। এই ভেবে ওই বৃদ্ধাকে রক্তাক্ত জখম এবং মারাত্মক ভাবে  আহত করে হবিগংরা তাদের নিজ ঘরে ফিরে আসে। পরে বৃদ্ধা মেহেরী বেগম প্রতিবেশীদের সহযোগিতা নিয়ে ঝিনাইগাতী হাসপাতাল ভর্তি হন।
মেহেরী বেগম বর্তমানে ঝিনাইগাতী হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডের ১১নম্বর বেডে শরীরের  অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। অপরদিকে প্রভাবশালী ও মারধরকারী হবিগংরা বুক ফুঁলিয়ে এলাকায় বিচরণ করলেও তাদের ভয়ে কেহ মুখ খোলতে সাহস পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে নিযার্তনের শিকার মেহেরী বেগমের ছেলে ইয়াছিন(৩০) ঢাকা থেকে এসে  ঝিনাইগাতী থানায় ঝিনাইগাতী থানায় ৩ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
নির্যাতিত নারী মেহেরী বেগম জানান, আমার স্বামী কখনো আমার গায়ে হাত তুলেনি। আমার ঘরের সামনে প্রশ্রাব করার প্রতিবাদ করায় পরপুরুষ হয়ে হবি,হুরমুজ ও সাইফুল এই ৩ভাই মিলে আমাকে একা পেয়ে মাটিতে ফেলে শরীরের বিভিন্ন গোপন স্থানে মারধর করেছে। তাদের আঘাতে আমার ডান পায়ের ঘিরার উপরে ২টি হাড় ভেঙ্গে গেছে। আমি এ জঘন্য অপরাধের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার চাই।
ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এসআই মাসুদুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছি।
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুদ রানা জানান, অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়েছি। আসামীরা পালিয়ে থাকায় তাদেরকে গ্রেপ্তার সম্ভব হচ্ছে না। অভিযান অব্যাহত আছে।
জঘন্যতম এ অপরাদের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের কঠিনতম শাস্তির দাবী জানান নির্যাতিতা বৃদ্ধা মেহেরী বেগমের ছেলে ও অত্র মামলার বাদী মো. ইয়াছিন আলী।