ঢাকা ০১:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারতে অনুপ্রবেশের মামলায় বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন খালাস

ফাইল ছবি

আলোর জগত ডেস্ক :   বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় বেকসুর খালাস দিয়েছেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের একটি আদালত। এর আগে তিন বার রায়ের তারিখ পেছানো হলেও শুক্রবার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খার সিংয়ের আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সালাহ উদ্দিন আহমেদকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। সেই সঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদকে দ্রুত দেশে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করতে ভারত সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে এবং সত্যের জয় হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদের আইনজীবী এসপি মোহন্ত জানান, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত সব সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে আজ শুক্রবার রায় ঘোষণা করেছেন।

এ আইনজীবী আরও বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদকে এই ফরেনার্স অ্যাক্ট মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন সেই সঙ্গে তিনি যাতে দ্রুত বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করার জন্য ভারত সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

রাজধানীর উত্তরা থেকে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ নিখোঁজ হন এ বিএনপি নেতা। ৬৩ দিন পর ওই বছরের গত ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ সালাহউদ্দিনকে উদ্ধারের পর সেখানকার একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। পরের দিন তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশ করায় ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী, সালাহউদ্দিনকে আটক দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। এরপর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিলংয়ের নেগ্রিমস হাসপাতালে নেয়া হয়। সে বছরই ২৭ মে সালাহউদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান।

পুলিশ হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে ফের তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ২৯ মে সালাহউদ্দিন আহমেদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলেও ইন্টারপোলের ঢাকা অফিসের রেড নোটিশ থাকায় তাকে জামিন দেয়নি ভারতের শিলংয়ের একটি আদালত।

এর আগে ভারতের শিলং সিভিল হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে চিকিৎসার জন্য ‘তৃতীয় কোনো দেশে’ নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন তার স্ত্রী। কিন্তু অবৈধ অনুপ্রবেশ মামলার আসামি হওয়ায় ভারতীয় পুলিশ তখন সে সুযোগ দেয়নি।

ভারতীয় পুলিশ তাকে আটক করে অনুপ্রবেশের দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ২০১৫ সালের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফরেনার অ্যাক্ট, ১৯৪৬ এর ধারা ১৪ এর অধীনে তার বিরুদ্ধে ভারতে (শিলং) কাগজপত্র ছাড়া অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের শিলংয়ে আকস্মিক উপস্থিতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিচার এড়াতে তিনি ভারতে এসেছেন। এই মামলায় আদালত সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য রেকর্ড করেন। এছাড়া তাকে শিলংয়ে পাওয়ার পর যে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয় সেই হাসপাতালের দুই চিকিৎসকসহ ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত।

এ বছরের ২৫ জুন উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ১৩ আগস্ট রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন। এরপর তিন দফা রায়ের তারিখ পেছানো হয়। সবশেষ ৯ অক্টোবর তারিখ নির্ধারিত থাকলেও আদালত সেই তারিখ পরিবর্তন করে শুক্রবার মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

ভারতে অনুপ্রবেশের মামলায় বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন খালাস

আপডেট টাইম : ১২:৫৩:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৮

আলোর জগত ডেস্ক :   বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় বেকসুর খালাস দিয়েছেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের একটি আদালত। এর আগে তিন বার রায়ের তারিখ পেছানো হলেও শুক্রবার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খার সিংয়ের আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সালাহ উদ্দিন আহমেদকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। সেই সঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদকে দ্রুত দেশে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করতে ভারত সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে এবং সত্যের জয় হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদের আইনজীবী এসপি মোহন্ত জানান, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত সব সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে আজ শুক্রবার রায় ঘোষণা করেছেন।

এ আইনজীবী আরও বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদকে এই ফরেনার্স অ্যাক্ট মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন সেই সঙ্গে তিনি যাতে দ্রুত বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করার জন্য ভারত সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

রাজধানীর উত্তরা থেকে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ নিখোঁজ হন এ বিএনপি নেতা। ৬৩ দিন পর ওই বছরের গত ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ সালাহউদ্দিনকে উদ্ধারের পর সেখানকার একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। পরের দিন তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশ করায় ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী, সালাহউদ্দিনকে আটক দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। এরপর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিলংয়ের নেগ্রিমস হাসপাতালে নেয়া হয়। সে বছরই ২৭ মে সালাহউদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান।

পুলিশ হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে ফের তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ২৯ মে সালাহউদ্দিন আহমেদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলেও ইন্টারপোলের ঢাকা অফিসের রেড নোটিশ থাকায় তাকে জামিন দেয়নি ভারতের শিলংয়ের একটি আদালত।

এর আগে ভারতের শিলং সিভিল হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে চিকিৎসার জন্য ‘তৃতীয় কোনো দেশে’ নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন তার স্ত্রী। কিন্তু অবৈধ অনুপ্রবেশ মামলার আসামি হওয়ায় ভারতীয় পুলিশ তখন সে সুযোগ দেয়নি।

ভারতীয় পুলিশ তাকে আটক করে অনুপ্রবেশের দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ২০১৫ সালের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফরেনার অ্যাক্ট, ১৯৪৬ এর ধারা ১৪ এর অধীনে তার বিরুদ্ধে ভারতে (শিলং) কাগজপত্র ছাড়া অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের শিলংয়ে আকস্মিক উপস্থিতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিচার এড়াতে তিনি ভারতে এসেছেন। এই মামলায় আদালত সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য রেকর্ড করেন। এছাড়া তাকে শিলংয়ে পাওয়ার পর যে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয় সেই হাসপাতালের দুই চিকিৎসকসহ ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত।

এ বছরের ২৫ জুন উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ১৩ আগস্ট রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন। এরপর তিন দফা রায়ের তারিখ পেছানো হয়। সবশেষ ৯ অক্টোবর তারিখ নির্ধারিত থাকলেও আদালত সেই তারিখ পরিবর্তন করে শুক্রবার মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।