ঢাকা ০৮:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

নুসরাত হত্যা : ৫ দিনের রিমান্ডে সোনাগাজী উপজেলা আ.লীগের সভাপতি

আলোর জগত ডেস্ক :  ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে পাঁচদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল শনিবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে বিকালে পুলিশ রুহুল আমিনকে আদালতে হাজির করে নুসরাত হত্যার ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। শুক্রবার বিকালে সোনাগাজী পৌর শহরের তাকিয়া রোডের তার নিজ বাড়ি থেকে রুহুল আমিনকে আটক করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

আরো পড়ুন :   আফগান যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে হামলা, নিহত ৭

আরো পড়ুন :   নুসরাত হত্যা: আরেক পরিকল্পনাকারী রাঙ্গামাটি থেকে গ্রেপ্তার

আরো পড়ুন :   পবিত্র শবে বরাত আজ

পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। নুসরাত হত্যাকাণ্ডে রুহুল আমিনসহ ১৯ জনকে আটক করা হয়।

নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, রুহুল আমিনকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে হাজির করে নুসরাত হত্যার ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছিল।

আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রোববার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নুসরাত হত্যা মামলার অন্যতম আসামি শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম।

জবানবন্দিতে শাহাদাত বলেন, নুসরাতের শরীরে আগুন দেওয়ার পর তিনি রুহুল আমিনকে বিষয়টি মোবাইলে জানান। তখন রুহুল আমিন তাকে বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি তোমরা চলে যাও। মূলত, শাহাদাতের জবানবন্দির পর থেকে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রুহুলের যোগসাজশ আছে, এমন অভিযোগ জোরালো হতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে। তবে নুসরাত হত্যা মামলার এজাহারে রুহুল আমিনের নাম নেই।

রুহুল আমিন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সদ্য বাতিল হওয়া পরিচালনা পর্ষদের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার কাছের মানুষ বলে এলাকায় পরিচিত।

অভিযোগ রয়েছে, শ্লীলতাহানি, আর্থিক অনিয়মসহ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন সময়ের অভিযোগের ক্ষেত্রে রুহুল নির্লিপ্ত ছিলেন।

এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, শ্লীলতাহানির মামলায় গত ২৭ মার্চ যখন অধ্যক্ষ কারাগারে যান, তখন রুহুল আমিনের লোকজন প্রতিবাদকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ২৮ ও ২৯ মার্চ তার লোকজন অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন।

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে এর আগেও ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

নুসরাত হত্যা : ৫ দিনের রিমান্ডে সোনাগাজী উপজেলা আ.লীগের সভাপতি

আপডেট টাইম : ০২:১১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৯

আলোর জগত ডেস্ক :  ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে পাঁচদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল শনিবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে বিকালে পুলিশ রুহুল আমিনকে আদালতে হাজির করে নুসরাত হত্যার ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। শুক্রবার বিকালে সোনাগাজী পৌর শহরের তাকিয়া রোডের তার নিজ বাড়ি থেকে রুহুল আমিনকে আটক করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

আরো পড়ুন :   আফগান যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে হামলা, নিহত ৭

আরো পড়ুন :   নুসরাত হত্যা: আরেক পরিকল্পনাকারী রাঙ্গামাটি থেকে গ্রেপ্তার

আরো পড়ুন :   পবিত্র শবে বরাত আজ

পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। নুসরাত হত্যাকাণ্ডে রুহুল আমিনসহ ১৯ জনকে আটক করা হয়।

নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, রুহুল আমিনকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে হাজির করে নুসরাত হত্যার ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছিল।

আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রোববার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নুসরাত হত্যা মামলার অন্যতম আসামি শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম।

জবানবন্দিতে শাহাদাত বলেন, নুসরাতের শরীরে আগুন দেওয়ার পর তিনি রুহুল আমিনকে বিষয়টি মোবাইলে জানান। তখন রুহুল আমিন তাকে বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি তোমরা চলে যাও। মূলত, শাহাদাতের জবানবন্দির পর থেকে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রুহুলের যোগসাজশ আছে, এমন অভিযোগ জোরালো হতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে। তবে নুসরাত হত্যা মামলার এজাহারে রুহুল আমিনের নাম নেই।

রুহুল আমিন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সদ্য বাতিল হওয়া পরিচালনা পর্ষদের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার কাছের মানুষ বলে এলাকায় পরিচিত।

অভিযোগ রয়েছে, শ্লীলতাহানি, আর্থিক অনিয়মসহ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন সময়ের অভিযোগের ক্ষেত্রে রুহুল নির্লিপ্ত ছিলেন।

এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, শ্লীলতাহানির মামলায় গত ২৭ মার্চ যখন অধ্যক্ষ কারাগারে যান, তখন রুহুল আমিনের লোকজন প্রতিবাদকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ২৮ ও ২৯ মার্চ তার লোকজন অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন।

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে এর আগেও ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।