নুরে আলম হাওলাদার
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষক জয়দুল ঢালী,মৌসুম ছাড়াই ২২ বিঘা জমিতে ইরির চাষ করে মানুষ কে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। এতে বাম্পার ফলনও হয়েছে বলে দেখা গেছে।
তার ফসলি জমির যেদিকে দুচোখ যায় এতে দেখা যায় যেন শুধু সবুজ পাতার সাথে তাকিয়ে আছে সোনালী ধান।
চারদিকে তাকিয়ে আনন্দের নিঃশ্বাস ফেলেন কৃষক জয়দুল ঢালী। বলেন,যখন আমি আষাঢ় মাসে ধানের চারা রোপণ করা শুরু করি,তখন কারো উৎসাহ পাইনি।সবাই বলেছে এগুলো করে কোন লাভ হবে না এর থেকে ফলন পাওয়া যাবে না।আমি একা নই আমার সাথে স্থানীয় আরও কয়েকজন কৃষক রয়েছে তাদের নিয়ে আমি সাহসীকতার সাথে কাজ শুরু করি। সঠিকভাবে পরিচর্যা করাতে আমার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে এলাকার লোকজন অবাক হয়ে গেছে। আশা করি আবহাওয়া ঠিক থাকলে সম্পূর্ণ ফসল ঘরে তুলতে পারুম।
এ বিষয়ে কৃষক মোঃ হাকিম দেওয়ান (৭০) বলেন, আমার বয়স ৭০ বছর এতে আমার এলাকায় আমি এরকম একটা চিন্তা কারো মাথায় দেহি নাই, জয়দুল ঢালী যেমনে কস্ট কইরা মৌসুম ছাড়াই ইরি করছে এটা দেইখা আমরাও চিন্তা করতাছি করমু।
কৃষক মোঃ রশিদ ভূইয়া জানান, এহানে আমিও ধান লাগাইছি, তখন মনডা খারাপ আছিলো কেউ সাহস দেয় নাই, সবাই বলছে টাহা নস্ট করতাছি এহন ধান দেইখা সবাই প্রশংসা করে।
এ ছাড়াও কৃষক মনোয়ার শেখ, মোঃ জনাব আলী ছৈয়াল বলেন, ইরির যহন মৌসুম থাহে তহনও এরকম ধান হয়না এহন যেমন হইছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন বাবুল ঢালী (৬০) বলেন, জয়দুল আমারি ছোট ভাই, আসলে ও যখন ইরি চাষ শুরু করে তখন বিষয় টি আমরা কেউ গুরুত্ব দেইনি। এখন দেখলাম এলাকার লোকজন ধান নিয়ে খুব আলোচনা করে, তো আমি একদিন দেখতে গেলাম এতে গিয়ে আমি অবাক হয়ে গেছি, চিন্তা করলাম মানুষ চেষ্টা করলে সত্যিই সফল হতে পারে। এ ছাড়াও তারমতো অন্যান্যরাও এভাবে কাজ করলে লাভবান হতে পারবে বলে আমি মনে করি।
নড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ( কৃষিবিদ) রোকনুজ্জামান বলেন, কৃষক জয়দুল ঢালীর নেতৃত্বে একটি কৃষক গ্রুপ এক ফসলী জমিতে তারা বাধ নির্মান করে তিন ফসলী জমিতে রুপান্তর করেছে, এতে যেমন তাদের নিজেদের খাদ্যের ব্যবস্থা হয়েছে এবং পাশাপাশি সেই খাদ্য টি জাতীয় উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে। এতে বাম্পার ফলন হয়েছে যার ফলে কৃষক অত্যান্ত খুশি, এতে কৃষি অফিস থেকে যতরকম সহযোগিতা রয়েছে সবি তারা পাবে।
জয়দুল ঢালী আরও বলেন, এই ফলন দেখে আগামীতে এই এলাকার সকল পতিত জমিই চাষের আওতায় আসবে। নিয়মিত সেচের পানি পেলে এখানে তিন ফসল সব সময় করা যাবে।ধান কাটা কেবল শুরু হয়েছে। আমি ২০ শতাংশ ধান ইতোমধ্যে ঘরে তুলেছি, এখন পুরো জমির ধান গোলায় উঠাতে পারলেই পরিপূর্ণ তৃপ্তি আসবে। প্রত্যাশা অনুযায়ি বেশ ভালো ফলন হয়েছে।