মিজানুর রহমান খান, মাদারীপুর
স্বামী তার নবজাতক কন্যার উপর রাগ করে স্ত্রীর শরীলে ইনজেকশনের মাধ্যমে এসিড প্রয়োগ করে হত্যা করেছেন। এলাকাবাসীর চাপের মুখে এসিড পুশ করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন স্বামী নামক নরপশু। তার দাবি, স্ত্রীকে নয় বরং দুই মাস বয়সী নবজাতক কন্যা সন্তানের ওপর রাগ থেকেই এমনটি করেছেন তিনি। শনিবার (১৭ জুলাই) মাদারীপুর সদর উপজেলা কালিকাপুর ইউনিয়নের চরনাচনা গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
অভিযুক্ত স্বামীর নাম মোঃ নুর হোসেন (২৪)। তিনি চরনাচনা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ লিয়াকত খানের ছেলে। নিহত গৃহবধু রোজিনা আক্তার (২২) মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়ন খালাসীকান্দি এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৩ বছর আগে নুর হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় রোজিনার। বিয়ের পর থেকেই তাদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। প্রায়ই নুর হোসেন রোজিনাকে মারধর করতেন। দুই মাস আগে তাদের কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। ছেলে না হওয়ায় তাদের বিবাদ আরও বেড়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) রাতে রোজিনা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে নুর হোসেন চিকিৎসার জন্য ব্যাথার ইনজেকশন দেওয়ার কথা বলে ব্যাটারির এসিড ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করেন। এর পরক্ষনেই রোজিনার শরীরের বিভিন্ন স্থান রক্তবর্ণ হয়ে যায়। নুর হোসেন তাকে ডাক্তারের কাছে না নিয়ে যাওয়াতে রোজিনার অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। বাড়ির আশেপাশের লোকজন শনিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। রোজিনাকে ফরিদপুর সেখানে নেওয়ার পর রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
চরনাচনা গ্রামের বাসীন্দা মোঃ মুহসিন উদ্দিন বলেন, রোজিনা হাসপাতালে যাওয়ার আগে আমাদের জানিয়েছে তাকে তার স্বামী ইনজেকশন দেওয়ার পরই এমন হয়েছে। বিষয়টি সন্দেহ হলে আমরা নুর হোসেনকে ইনজেকশনে কী ছিল জানার জন্য চাপ প্রয়োগ করি । সে চাপের মুখে বলতে বাধ্য হয় যে, দুই মাস বয়সী কন্যা সন্তানের ওপর রাগ থেকে সে রোজিনার শরীরে এসিড প্রয়োগ করেছে। তবে রোজিনাকে মারার কোনো উদ্দেশ্য তার ছিল না।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম মিঞার নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমরা এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এখন তদন্ত সাপেক্ষ এই ব্যাপারে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে॥