দৈনিক আলোর জগত ডেস্ক : 
মনির হোসেন, বাকেরগঞ্জ (বরিশাল)
বরিশাল বাকেরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে এই প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বাদশা নিজামী। ক্ষমতাসীন দলের দলীয় প্রতীক নিয়েই মাঠে লড়াই করবেন বলে তিনি আশাবাদী। নিয়ামতি ইউনিয়নে দশজন প্রার্থীই শুধু দলীয় মনোনয়ন টিকিট পেতে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বহু আগে থেকেই। এক যুগ ধরে ক্ষমতায় থাকা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন শরীফ মাসুম মাস্টার, শিল্পপতি বাদশা নিজামী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমাম হোসেন নিলু মিরা, সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা , কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম মনির মুন্সি, সাবেক চেয়ারম্যান কামাল হোসেন তালুকদার এবং তার ভাই হারুন তালুকদার, বাকেরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন হাওলাদার ও সোহরাব হোসেন মৃধা সহ দশজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দলীয়ভাবে মনোনয়ন পত্র জমা দেন।যাচাই-বাছাইয়ের পরে বাতিল প্রার্থীরা কেউ কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী অর্থাৎ তারা সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়বেন এমনটা জানিয়েছেন একাধিক প্রার্থী। একটি গোপন সূত্রে পাওয়া যায়, দলীয় ভাবে মনোনয়নে বাদশা নিজামী বহুগুণ এগিয়ে আছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে বাদশা নিজামী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতিবিদ ও বরিশাল-০৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মৃত্যু আলহাজ্ব সৈয়দ মাসুদ রেজা ভাইয়ের আদর্শের রাজনীতি করতে চাই। সৈয়দ মাসুদ রেজা ২০১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এর পর থেকে (ভাবী) আইরিন রেজা তার দল এবং এলাকার মানুষের জন্য বিভিন্নভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
মনির হোসেন, বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) সৈয়দ রেজা ও তার পরিবারের উদ্দেশ্য বলেন তাদের আদর্শ ও ভালোবাসা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা তবে তাদের দেয়া আদর্শগুলো ধারণ করে নিয়ামতি ইউনিয়নের মানুষের পাশে থাকতে চাই। হাতে হাত রেখে সকলের সহযোগিতা নিয়ে নিয়ামতি ইউনিয়নকে একটি আদর্শ ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। বর্তমানে বন্দরে ভূমি দখল, চর দখল, চাঁদাবাজি ও মাদক বানিজ্য চরমে পৌছেছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন মিলন আসার পরে বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু অপরাধী ধরা পরেছে এবং তাঁকে তিনি ধন্যবাদ জানায়।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টি ইউনিয়নের নির্বাচন শেষ হয়েছে গত ২১(জুন) ২০২১ইং। বাকি ০৩টি ইউনিয়নের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নিজ নিজ এলাকার প্রার্থী নিয়ে ভোটারদের রয়েছে আলাদা হিসাব-নিকাশ। নির্বাচন সামনে রেখে ভোটারদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। আর এসব আলোচনার ঝড় উঠছে ক্যান্টিনেও চায়ের চুমুকের ফাঁকে ফাঁকে। এই আলোচনার মধ্যে বর্তমানে শীর্ষে আছেন নিয়ামতি ইউনিয়নের শিল্পপতি বাদশা নিজামী। বিএনপি-জামাতের কোনো নির্বাচনী প্রার্থীর নাম এখনো জানা যায়নি তবে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর মনোনীত প্রার্থী হুমায়ুন কবির হাতপাখা নিয়ে লড়বেন।
ইতিমধ্যে অনেকে শুভেচ্ছা পোষ্টারের মাধ্যমে পরিচিতি বাড়িয়েছে কেউবা আবার করোনা দূর্যোগে প্রথম ধাপে গরীব হতদরিদ্র পরিবারে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে। করোনার প্রথম ধাপে অনেকেই সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়াতে দেখা গেলেও দ্বিতীয় ধাপে অনেকেই আবার, আড়ালে রয়েছেন নির্বাচনে অংশগ্রহন না করার কারনে।
ইউনিয়নের সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ
কালের স্বাক্ষী বহনকারী বিষখালী নদীর তীরে গড়ে উঠা বাকেরগঞ্জ উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল হলো নিয়ামাতি ইউনিয়ন। ধর্মপ্রচারক শাহ্ নেয়ামাতুল্লাহ (রঃ) এর নামানুসারে নিয়ামতি ইউনিয়নের নাম করণ করা হয়। দক্ষিণ বাংলায় ইসলাম ধর্ম প্রচারে শাহ্ নেয়ামাতুল্লাহ (রঃ) এর অন্যতম ভূমিকা পালন করেন। কাল পরিক্রমায় নিয়ামতি ইউনিয়ন শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, খেলাধুলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নিজস্ব স্বকীয়তা সমুজ্জ্বল।
ইউনিয়নের আয়তন – ১৪.৭০ (বর্গ কিঃ মিঃ) লোকসংখ্যা – ৪২২৮৮ জন (প্রায়) (২০১১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী)
গ্রামের সংখ্যা – ১৭টি।
০১। পূর্ব মহেশপুর, ০২। মহেশপুর, ০৩। পঃ মহেশপুর, ০৪। খাস মহেশপুর, ০৫। মধ্য মহেশপুর, ০৬। টেংরাখালী, ০৭। ঢালমাড়া, ০৮। পূর্ব কৃষ্ণনগর, ০৯। পোড়াচিনা, ১০। পুইয়াউটা, ১১। কাফিলা, ১২। রামনগর, ১৩। রূপারঝোড়, ১৪। পঃ কৃষ্ণনগর, ১৫। চামটা, ১৬। মধ্য নিয়ামতি, ১৭। নিয়ামতি।
মৌজার সংখ্যা – ০৫ টি, হাট/বাজার সংখ্যা – ০৪টি । উপজেলা সদর থেকে যোগাযোগ মাধ্যম – অটো, রিক্সা, টেম্পু, মটর সাইকেল, বাস। শিক্ষার ব্যবস্থা– ৫৯%। (২০০১ এর শিক্ষা জরীপ অনুযায়ী) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়- ১৩ টি। বে-সরকারী রেজিঃ প্রাঃ বিদ্যালয়- ০৬ টি। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়- ০২ টি। মাদ্রাসা- ০৩টি। এনজিওঃ- ০৭ টি। ব্যাংক – ০২ টি
নিয়ামতিতে বিষখালী নদীর তীরে গড়ে উঠা বাকেরগঞ্জ উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল হলো নিয়ামাতি বন্দর। বন্দরে রয়েছে নৌ পুলিশ ফাঁড়ি সহ প্রায় ৫০ হাজার লোকের বসবাস। তাই রাজনৈতিক দিক থেকেও বহুগুণ আগানো, এক কথায় The best in village politics. বন্দরে যে রকমের সুনাম আছে তার বিপরীতও আছে। বারবার চাঁদাবাজি জমি দখল সহ নানা রকমের অপকর্মের বিষয়ে একটি কুচক্র মহলের ইন্ধনদাতাদের নাম উঠে আসেন। স্থানীয় জনসাধারণের দাবী দলীয়ভাবে যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ন্যায়ের পক্ষে অসহায়ের পাশে থাকবে এমন কোনো সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন পত্র দিলে তারা দলীয় ভাবে কাজ করবেন।
জনসাধারণের মতামত , বাদশা নিজামীর মতোন একজন আদর্শ মানুষই পারে বন্দরের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে আনতে এবং বন্দরের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে।
বাদশা নিজামীর রাজনৈতিক জীবনীঃ
তিনি স্কুল জীবন থেকেই ছাত্রলীগ রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি বলেন আমি নিয়ামতি ইউনিয়নের সৈয়দ আফছার আলী ডিগ্রি কলেজে পড়ার সময়কালে বাকেরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলাম। বর্তমানে তিনি নিয়ামতি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা।
রাজনৈতিক জীবনেও তিনি অনেক ত্যাগ শিকার করেন। তিনি আশাবাদী দক্ষিণ অঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আলহাজ্ব সৈয়দ মাসুদ রেজা’র সহধর্মিণী- বরিশাল জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিসেস আইরিন রেজা, বাকেরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শামসুল আলম চুন্নু এবং আমার আদর্শিক নেতা- বাকেরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া তারা আমাকে আমার বিগত দিনে দলের জন্য কতটা নিবেদিত প্রাণ ছিলাম তা বিবেচনা করে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিবেন বলে তিনি আশাবাদী।
বাকেরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাদশা নিজামী বলেন ১৪নং নিয়ামতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করব। দক্ষিণবঙ্গের রাজনৈতিক অভিভাবক মাননীয় মন্ত্রী আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর সমর্থন ও দোয়া নিয়ে সমাজের অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের অধিকার আদায় ও সমাজের উন্নয়নমূলক কাজ কর্ম করে সব সময়ই জনগনের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চাই।
এতে আমার যত কষ্ট বা আঘাত আসুক না কেন কিছুমাত্র ও পিছু হটবো না। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে এলাকাবাসীর উন্নয়নে কি পদক্ষেপ গ্রহন করবেন জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, নিয়ামতি ইউনিয়ন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, হাটবাজারের সার্বিক উন্নয়ন, এলাকায় সড়কবাতি, পানি সরবরাহ, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, ড্রেন নির্মাণসহ উন্নয়ন মূলক কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
