দিনাজপুর প্রতিনিধি :
কৃষিমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, পৃথিবীতে যতরকমের কৃষি পন্য উৎপাদন হয় তার সবই দিনাজপুরের মাটিতে ফলানো সম্ভব। এ এলাকার মাটির উর্বরতার কারনে ফলন হবেও দ্বিগুন। বাংলাদেশের দ্রæত অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এক গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করছে কৃষি সেক্টর।
গতকাল সোমবার দিনাজপুরের নশিপুরস্থ বিএডিসির ভিত্তি পাট বীজ খামার ও বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষনা ইনস্টিটিউট পরিদর্শনকালে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি এই সম্ভাবনার কথা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, উৎপাদনশীলতা, আয় বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠীর সমৃদ্ধির জন্য কৃষির গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনুধাবন করেছিলেন কৃষির উন্নতিতে নিহিত রয়েছে কৃষকের অর্থনৈতিক মুক্তি। বর্তমান কৃষিতে দেশের যে সাফল্য তা বঙ্গবন্ধুর দুরদর্শিতা ও পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে হাইব্রিড ভুট্টা ও শাকসবজি উৎপাদন কয়েক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফসলের নিবিড়তা গত ৫ বছরে শতকরা ১৯২ হতে ২১৬ ভাগে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে কৃষিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে পাট উৎপাদনে ৭ম, পাট ও কাঠাল উৎপাদনে ২য়, ধান উৎপাদনে ৩য়, সবজি উৎপাদনে ৩য়, আম উৎপাদনে ৭ম, আলু উৎপাদনে ৭ম, পেয়ারা উৎপাদনে ৮ম। সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন কৃষিতে রোল মডেল।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য পরিবেশ সম্মতভাবে পুষ্টিসমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, উচ্চ মুল্যের ফসল রপ্তানীমুখীকরণ, খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়করন ব্যবস্থাপনা জোরদারকরণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। আমাদের কৃষি উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও শ্রমিক সংকট মোকাবেলায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রুপকল্প ২০২১ এর ধারাবাহিকতায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানের প্রত্যয়ে কৃষি সেক্টরে অর্জনের এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানান। সকলের প্রচেষ্টায় আমরা উন্নত দেশের অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সক্ষব হবো।
পরিদর্শন শেষে মুজিববর্ষ উপলক্ষে কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শন মেলার উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী।
বিশেষ অতিথি জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করেছে। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে দিনাজপুরের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে ভুট্টা উৎপাদনে দিনাজপুর প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষনা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ এছরাইল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, কৃষিমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান অপু, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. অমিতাব সরকার, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আসাদুল্লাহ, জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী, ধান ও গবেষনা ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক ড, শাহজাহান কবীর প্রমুখ। উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ বেতার রাজশাহী কেন্দ্রের রুখসানা আক্তার লাকী ও গম ও ভুট্টা গবেষনা রাজশাহীর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুব রহমান। বিকেলে মন্ত্রী সদরপুরের হর্টিকালচার সেন্টার পরিদর্শন করেন।
সকালে জেলা আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দিনাজপুর সার্কিট হাউজে মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।