বিনোদন ডেস্ক: রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা তথা অভিনেতা প্রবীর মিত্রের জন্মদিন আজ। ১৯৪০ সালের ১৮ আগস্ট তিনি চাঁদপুর শহরে এক কায়স্থ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। বংশপরম্পরায় পুরনো ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা তিনি। বর্ষীয়ান এই চলচ্চিত্র অভিনেতার সময় কাটছে অনেকটা নিরবে নিভৃতে। তাই আজকের জন্মদিনে নেই কোন উৎসব। নেই আলাদা কোন আয়োজন।
প্রবীর মিত্র প্রথম জীবনে সেন্ট গ্রেগরি থেকে পোগজ স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র ২০০০ সালে মারা গেছেন। তার এক মেয়ে তিন ছেলে। ছোট ছেলে ২০১২ সালে ৭ মে মারা গেছেন।
প্রবীর ‘লালকুটি’ থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনে তিনি সর্বক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছেন। তিনি বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
স্কুলে পড়া অবস্থায় জীবনে প্রথমবারের মতো নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এটি ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’। চরিত্র ছিল প্রহরী। এরপর পুরনো ঢাকার লালকুঠিতে শুরু হয় তার নাট্যচর্চা। পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে জলছবি চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। সিনেমার গল্প ও সংলাপ লিখেছিলেন তারই স্কুল জীবনের বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামান। প্রথমদিকে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করতেন এই অভিনেতা। তিতাস একটি নদীর নাম, চাবুকসহ বেশ কিছু সিনেমাতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। সর্বশেষ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা সিনেমাতে। পরবর্তী সময় নায়ক না হয়ে চরিত্রাভিনেতার দিকে মনোযোগী হয়ে ওঠেন তিনি।
প্রবীর মিত্র ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছেন, ছিলেন ক্যাপ্টেইন, একই সময় তিনি ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবল খেলেছেন।
প্রবীর মিত্রের উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘চাবুক’, ‘সীমার’, ‘তীর ভাঙা ঢেউ’, ‘শেয়ানা’, ‘রঙ্গীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘অঙ্গার’, ‘পুত্রবধূ’, ‘নয়নের আলো’, ‘জয় পরাজয়’, ‘চাষীর মেয়ে’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘আবদার’ ইত্যাদি।
সারাদিন বাসায় বই, পত্রপত্রিকা আর টেলিভিশন দেখেই দিন কাটে তার। আগে সময় পেলে বিকেলে ছুটে যেতেন কাকরাইল ফিল্ম পাড়ায়। চা খেতেন, আড্ডা মেতে উঠতেন। সেসব এখন শুধুই স্মৃতি।