আলোর জগত ডেস্ক : সতীর্থদের প্রার্থনা আর চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে চলেই গেলেন ফেনীর সোনাগাজীর অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে সে। তার মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন ডা. সামন্ত লাল সেন।
আধঘণ্টা আগেই ৯টার দিকে নুসরাতের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর ডা. আবুল কালাম জানিয়েছিলেন, নুসরাতের শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।
আগুনে হত্যাচেষ্টার পর নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়। তার চিকিৎসায় গঠিত হয় মেডিকেল বোর্ড। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সবার প্রার্থনা-চেষ্টাকে বিফল করে চলে গেলো নুসরাত।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি নামের ওই ছাত্রী। মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে রাফি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান।
সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচ ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে নুসরাতের শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে যায়। বর্তমানে ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।