ঢাকা ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

দিনাজপুরে স্ত্রী হত্যার রায়ে একজনের ফাঁসি কার্যকর

মোঃ আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনধি

 

দিনাজপুর জেল কারাগারে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে আদালতের বিচারে দন্ডিত ফাঁসির আসামী আইনী সকল কার্যক্রম শেষে আব্দুল হক নামে এক ব্যাক্তির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
দিনাজপুর জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় তার জেল কারাগার সম্মুখে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ড রায় কার্যকর করা ব্যাক্তি হলেন, আব্দুল হক (৪০) রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ভক্তিপুর চৌধুরীপাড়া এলাকার মৃত আছির উদ্দীনের পুত্র। গত ২০০২ সালের ২৮ আগস্ট থেকে তিনি স্ত্রী হত্যার মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে বন্দি রয়েছে। আদালতের রায়ে তার মৃত্যুদন্ড দন্ডিত করা হলে হাই কোর্টে তার রায়ের আপিল শুনানি শেষ হওয়ার পর তার রায় কার্যকর করার জন্য রংপুর জেল কারাগার থেকে দিনাজপুর জেল কারাগারে গত ২৬ মে পাঠানো হয়।
মৃত্যুদন্ডের রায় কার্যকর করার পুর্বে গত বুধবার বিকাল ৪টায় নিহতের পরিবারের ১৫ সদস্য তার সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করেন এবং খাবার খাইয়ে ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে চলে যান। পরে বুধবার রাত ১২টা ১মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
ফাঁসির রায় কার্যকর করার সময় রংপুর জেল কারাগারে ডিআইজি (প্রিজন) আলতাফ হোসেন, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুছ, চিকিৎসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জেলা কারাগারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০০২ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে আব্দুল হক তার স্ত্রীকে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনে হত্যা করেন। এই ঘটনায় পরের দিন ৯ ফেব্রæয়ারি তার শাশুড়ি বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(ক) ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
৫ বছর পরে ২০০৭ সালের ৩ মে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত এর বিচারক আসামী আব্দুল হককে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করার রায় দেন। পরে আব্দুল হকের পরিবার হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও সেখানে সাজা বহাল থাকে।
সর্বশেষ আব্দুল হক রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন। গত ১৮ মে মামলাটির যাবতীয় বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুর করলে ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

দিনাজপুরে আরো ৪৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত \ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে কড়াকড়ি
মোঃ আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনধি \ দিনাজপুরে করোনা পরিস্থিতি ক্রমাম্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসাধারণকে স্বাভাবিক চলাফেরা এবং হাট-বাজার, রেল স্টেশন, বাসষ্ট্যান্ড ও জনবহুল এলাকায় জন সমাবেশ না ঘটাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। জেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার ৪৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী জানান, গত সোমবার রাত জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরী সভা তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দিনাজপুর সদর আসনের সাংসদ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব নুরুল ইসলাম ভার্চ্যুয়ালী অংশ গ্রহন করে দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৮ জুন থেকে বৃহস্পতিবার ১০ জুন পর্যন্ত শহরে জন বহুল ও ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে মাইক যোগে করোনার অবনতির বিষয়গুলো জনসম্মুখে অবহিতকরণ প্রচার চালানো হচ্ছে। এছাড়া প্রশাসনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক টিমের মাধ্যমে শহরের ব্যস্ততম এলাকার মোড়গুলোতে জনসাধারণ মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে সচেতনতা মুলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি জানান, গত ৩ দিন দিনাজপুর শহরে এবং ১৩টি উপজেলায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে মাস্ক ব্যবহার না করার অভিযোগে ৫ শতাধিক ব্যাক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনিক ভাবে প্রায় ৫ হাজার ব্যাক্তিকে করোনার বিষয় মাস্ক ব্যবহারে সতর্ক করা হয়। একই সময় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানটিম জেলায় ২ হাজার ৩৮টি মোটর সাইকেল অহেতুক চলাচল, হেলমেট ব্যবহার না করা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানা সহ অন্যান্য অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মোটর যান আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৩ দিনে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পুনরায় করোনা প্রতিরোধ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এই জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আগামীতে কি ধরনের কর্মসূচী দিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে নেয়া যাবে।
এদিকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, তার পুলিশ বাহিনী স্বাভাবিক আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রনের কার্যক্রমের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে সার্বিক বিষয় করোনা নিয়ন্ত্রনে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। গত বছর এই সময়ে দিনাজপুরে করোনা পরিস্থিতির যে অবস্থায় ছিল তার চেয়ে চলতি বছর এ সময়ে পরিস্থিতি অনেকগুন বেড়ে গেছে।
এদিকে দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুস জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় প্রেস ব্রিফিংএ তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, গত ২৪ ঘন্টায় দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ল্যাবে ১৪৮ জনের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমের পজেটিভ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৭ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ৪০ জনের করোনা সংক্রমের আক্রান্ত বেশি হওয়ায় রেড জোনে ভর্তি। অপর ২৭ জন সুস্থ্য হয়ে হাসপাতালের সাধারণ বেডে চিকিৎসা নিচ্ছে। এপর্যন্ত জেলা ৬ হাজার ১১৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৬৫৪ জন সুস্থ্য হয়েছে। বর্তমানে ৩৭২ জন স্বাস্থ্য বিভাগের অধিনে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। করোনা আক্রান্তের হার বৃহস্পতিবার ২৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
হাকিমপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওয়াহিদ ফেরদৌস জানান, ভারত থেকে আগত গত ৭ দিনে ১২২ জন যাত্রী হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ সীমানায় প্রবেশ করেছে। তাদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত ৩২ কে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত¡াবধায়নে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যাদের শরীরে করোনার সংক্রমন পাওয়া না গেলেও তাদেরকে হাকিমপুরে ৩টি হোটেলে হোমা কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। নির্দেশ অনুযায়ী ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার পর তাদেরকে পুনরায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে করোনার অস্তিত্ব না থাকলে নিজ বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়া হবে। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৭০ জনের মধ্যে এম এম হোটেলে ২৭ জন, হোটেল ক্যাপিলায় ২৯ জন ও হোটেল নুর জাহান লজে ৩৪ জন রয়েছে। যারা হোম কোয়ারেন্টাইন রয়েছেন, তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে নজরদারী নজরদারী চলমান রয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

দিনাজপুরে স্ত্রী হত্যার রায়ে একজনের ফাঁসি কার্যকর

আপডেট টাইম : ১২:১৮:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১

মোঃ আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনধি

 

দিনাজপুর জেল কারাগারে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে আদালতের বিচারে দন্ডিত ফাঁসির আসামী আইনী সকল কার্যক্রম শেষে আব্দুল হক নামে এক ব্যাক্তির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
দিনাজপুর জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় তার জেল কারাগার সম্মুখে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ড রায় কার্যকর করা ব্যাক্তি হলেন, আব্দুল হক (৪০) রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ভক্তিপুর চৌধুরীপাড়া এলাকার মৃত আছির উদ্দীনের পুত্র। গত ২০০২ সালের ২৮ আগস্ট থেকে তিনি স্ত্রী হত্যার মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে বন্দি রয়েছে। আদালতের রায়ে তার মৃত্যুদন্ড দন্ডিত করা হলে হাই কোর্টে তার রায়ের আপিল শুনানি শেষ হওয়ার পর তার রায় কার্যকর করার জন্য রংপুর জেল কারাগার থেকে দিনাজপুর জেল কারাগারে গত ২৬ মে পাঠানো হয়।
মৃত্যুদন্ডের রায় কার্যকর করার পুর্বে গত বুধবার বিকাল ৪টায় নিহতের পরিবারের ১৫ সদস্য তার সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করেন এবং খাবার খাইয়ে ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে চলে যান। পরে বুধবার রাত ১২টা ১মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
ফাঁসির রায় কার্যকর করার সময় রংপুর জেল কারাগারে ডিআইজি (প্রিজন) আলতাফ হোসেন, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুছ, চিকিৎসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জেলা কারাগারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০০২ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে আব্দুল হক তার স্ত্রীকে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনে হত্যা করেন। এই ঘটনায় পরের দিন ৯ ফেব্রæয়ারি তার শাশুড়ি বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(ক) ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
৫ বছর পরে ২০০৭ সালের ৩ মে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত এর বিচারক আসামী আব্দুল হককে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করার রায় দেন। পরে আব্দুল হকের পরিবার হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও সেখানে সাজা বহাল থাকে।
সর্বশেষ আব্দুল হক রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন। গত ১৮ মে মামলাটির যাবতীয় বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুর করলে ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

দিনাজপুরে আরো ৪৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত \ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে কড়াকড়ি
মোঃ আব্দুল আজিম, দিনাজপুর প্রতিনধি \ দিনাজপুরে করোনা পরিস্থিতি ক্রমাম্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসাধারণকে স্বাভাবিক চলাফেরা এবং হাট-বাজার, রেল স্টেশন, বাসষ্ট্যান্ড ও জনবহুল এলাকায় জন সমাবেশ না ঘটাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। জেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার ৪৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী জানান, গত সোমবার রাত জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরী সভা তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দিনাজপুর সদর আসনের সাংসদ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব নুরুল ইসলাম ভার্চ্যুয়ালী অংশ গ্রহন করে দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৮ জুন থেকে বৃহস্পতিবার ১০ জুন পর্যন্ত শহরে জন বহুল ও ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে মাইক যোগে করোনার অবনতির বিষয়গুলো জনসম্মুখে অবহিতকরণ প্রচার চালানো হচ্ছে। এছাড়া প্রশাসনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক টিমের মাধ্যমে শহরের ব্যস্ততম এলাকার মোড়গুলোতে জনসাধারণ মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে সচেতনতা মুলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি জানান, গত ৩ দিন দিনাজপুর শহরে এবং ১৩টি উপজেলায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে মাস্ক ব্যবহার না করার অভিযোগে ৫ শতাধিক ব্যাক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনিক ভাবে প্রায় ৫ হাজার ব্যাক্তিকে করোনার বিষয় মাস্ক ব্যবহারে সতর্ক করা হয়। একই সময় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানটিম জেলায় ২ হাজার ৩৮টি মোটর সাইকেল অহেতুক চলাচল, হেলমেট ব্যবহার না করা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানা সহ অন্যান্য অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মোটর যান আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৩ দিনে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পুনরায় করোনা প্রতিরোধ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এই জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আগামীতে কি ধরনের কর্মসূচী দিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে নেয়া যাবে।
এদিকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, তার পুলিশ বাহিনী স্বাভাবিক আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রনের কার্যক্রমের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে সার্বিক বিষয় করোনা নিয়ন্ত্রনে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। গত বছর এই সময়ে দিনাজপুরে করোনা পরিস্থিতির যে অবস্থায় ছিল তার চেয়ে চলতি বছর এ সময়ে পরিস্থিতি অনেকগুন বেড়ে গেছে।
এদিকে দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুস জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় প্রেস ব্রিফিংএ তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, গত ২৪ ঘন্টায় দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ল্যাবে ১৪৮ জনের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমের পজেটিভ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৭ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ৪০ জনের করোনা সংক্রমের আক্রান্ত বেশি হওয়ায় রেড জোনে ভর্তি। অপর ২৭ জন সুস্থ্য হয়ে হাসপাতালের সাধারণ বেডে চিকিৎসা নিচ্ছে। এপর্যন্ত জেলা ৬ হাজার ১১৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৬৫৪ জন সুস্থ্য হয়েছে। বর্তমানে ৩৭২ জন স্বাস্থ্য বিভাগের অধিনে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। করোনা আক্রান্তের হার বৃহস্পতিবার ২৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
হাকিমপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওয়াহিদ ফেরদৌস জানান, ভারত থেকে আগত গত ৭ দিনে ১২২ জন যাত্রী হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ সীমানায় প্রবেশ করেছে। তাদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত ৩২ কে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত¡াবধায়নে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যাদের শরীরে করোনার সংক্রমন পাওয়া না গেলেও তাদেরকে হাকিমপুরে ৩টি হোটেলে হোমা কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। নির্দেশ অনুযায়ী ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার পর তাদেরকে পুনরায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে করোনার অস্তিত্ব না থাকলে নিজ বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়া হবে। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৭০ জনের মধ্যে এম এম হোটেলে ২৭ জন, হোটেল ক্যাপিলায় ২৯ জন ও হোটেল নুর জাহান লজে ৩৪ জন রয়েছে। যারা হোম কোয়ারেন্টাইন রয়েছেন, তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে নজরদারী নজরদারী চলমান রয়েছে।