ঢাকা ০১:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ২৩ জানুয়ারি

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা মামলার রায় হতে চলেছে আগামী ২৩ জানুয়ারি। সোমবার এক টুইটার পোস্টে এ কথা জানিয়েছে গাম্বিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়। যদিও এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি আইসিজে।

আরো পড়ুন: রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হলেন মিখাইল মিসুস্তিন

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জাতিসংঘের ১৯৪৮ সালে গৃহীত গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে বলে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক আদালতে দেশটির বিরদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করে গাম্বিয়া। রোহিঙ্গা গণহত্যায় খোদ সু চি’র সমর্থন রয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র পক্ষ থেকে গাম্বিয়া এ মামলা করে। রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে এবারই প্রথমবারের মতো মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে গেছে আফ্রিকার ক্ষুদ্র রাষ্ট্র গাম্বিয়া। এই মামলা দায়ের করা এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা।

তবে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হতে বহু বছর সময় লাগে। তাই মামলা দায়েরকারী মূল মামলার পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিকার চেয়েও আবেদন করেন। এ বিষয়ে গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে শুনানি হয়।

গত ১০ ডিসেম্বর শুনানির প্রথম দিনে সাক্ষ্য-প্রমাণ দাখিল করে গাম্বিয়া প্রজাতন্ত্র। আদালতে গাম্বিয়ার আইনজীবীরা গণহত্যার সম্পর্কে বলেন, রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করতে রাষ্ট্রীয় মদদে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। তারা বলেন, গণহত্যা এখনও চলছে এবং তা বন্ধ করতে অন্তবর্তী আদেশ জরুরি।

পরদিন মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন সেদেশের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। তিনি সেখানে প্রকাশ্যে মিথ্যাচার করেন যা নিয়ে গোটা বিশ্ব জুড়ে সমালোচিত হন একজসময় শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার জেতা এই নারী। তিনি আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যা হয়নি এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এ জাতীয় কোনো কর্মকাণ্ডের সেঙ্গ জড়িত নয়। তিনি তাদের সম্পূর্ণ নির্দোষ বলেও দাবি করেন।

যদিও রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী গত কয়েক বছর ধরে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বহু বছর ধরেই মিয়ানমারে নির্যাতীত হচ্ছে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা। কিন্তু ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনারা। তখন ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

মির্জাগঞ্জে রাতের আধারে বসতঘর লুটপাট

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ২৩ জানুয়ারি

আপডেট টাইম : ০৭:৪৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা মামলার রায় হতে চলেছে আগামী ২৩ জানুয়ারি। সোমবার এক টুইটার পোস্টে এ কথা জানিয়েছে গাম্বিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়। যদিও এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি আইসিজে।

আরো পড়ুন: রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হলেন মিখাইল মিসুস্তিন

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জাতিসংঘের ১৯৪৮ সালে গৃহীত গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে বলে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক আদালতে দেশটির বিরদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করে গাম্বিয়া। রোহিঙ্গা গণহত্যায় খোদ সু চি’র সমর্থন রয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র পক্ষ থেকে গাম্বিয়া এ মামলা করে। রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে এবারই প্রথমবারের মতো মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে গেছে আফ্রিকার ক্ষুদ্র রাষ্ট্র গাম্বিয়া। এই মামলা দায়ের করা এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা।

তবে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হতে বহু বছর সময় লাগে। তাই মামলা দায়েরকারী মূল মামলার পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিকার চেয়েও আবেদন করেন। এ বিষয়ে গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে শুনানি হয়।

গত ১০ ডিসেম্বর শুনানির প্রথম দিনে সাক্ষ্য-প্রমাণ দাখিল করে গাম্বিয়া প্রজাতন্ত্র। আদালতে গাম্বিয়ার আইনজীবীরা গণহত্যার সম্পর্কে বলেন, রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করতে রাষ্ট্রীয় মদদে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। তারা বলেন, গণহত্যা এখনও চলছে এবং তা বন্ধ করতে অন্তবর্তী আদেশ জরুরি।

পরদিন মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন সেদেশের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। তিনি সেখানে প্রকাশ্যে মিথ্যাচার করেন যা নিয়ে গোটা বিশ্ব জুড়ে সমালোচিত হন একজসময় শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার জেতা এই নারী। তিনি আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যা হয়নি এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এ জাতীয় কোনো কর্মকাণ্ডের সেঙ্গ জড়িত নয়। তিনি তাদের সম্পূর্ণ নির্দোষ বলেও দাবি করেন।

যদিও রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী গত কয়েক বছর ধরে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বহু বছর ধরেই মিয়ানমারে নির্যাতীত হচ্ছে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা। কিন্তু ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনারা। তখন ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা।