ঢাকা ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম :
Logo অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামি শরিফুল শেখ ও তথি বেগম’কে ফরিদপুরের কোতোয়ালি এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। Logo মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী এলাকা হতে ২৩.৫ কেজি গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা Logo আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরামের শ্রদ্ধা

আবরার হত্যা মামলার ২৫ আসামির বিচার শুরু

আলোর জগত ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ২৫ আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান মঙ্গলবার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতি কার্যদিবসে একটানা এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে।এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল এ কথা জানান।

গত ২ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রার্থনা করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল, এহসানুল হক সমাজী ও অ্যাডভোকেট মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া। ওইদিন আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবীরা অব্যাহতি (ডিসচার্জ) চেয়ে শুনানি করেন। আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, আমিনুল গণি টিটো, নজরুল ইসলাম, মঞ্জুরুল আলম, ফারুক আহাম্মদ, প্রিয়লাল সাহা, জাহিদুর রহমান।

অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আইন অনুযায়ী সময়ের মধ্যেই এ মামলার বিচার শেষ হবে বলে আশা করছি। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত টানা সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত ৬ অক্টোবর হত্যা করা হয়। বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটের এ মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার। ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছিল। ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় আবরার ফাহাদকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। আবরার বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করে। পাঁচ সপ্তাহ তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ অভিযোগপত্র গ্রহণ করে গত ১৮ নভেম্বর পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তাদের মধ্যে একজন পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এখনো তিনজন পলাতক।

এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, বহিষ্কৃত উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, বহিষ্কৃত সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মোজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, ইসতিয়াক হাসান মুন্না, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির ও আকাশ হোসেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, এস এম মাহমুদ সেতু, এজাহারের বাইরের ছয় আসামি হলেন-বুয়েট ছাত্রলীগের গ্রন্থণা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, মাহামুদ সেতু ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম। আর পলাতক বাকি তিন আসামি হলেন- ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র মাহমুদুল জিসান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের মুজতবা রাফিদ।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন। তাদের সকলকে বুয়েট ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত ১৫ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তর করে আদেশ জারি হয়। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যে কোনো মামলা ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা না গেলে আরও ৪৫ দিন সময় নিতে পারে আদালত।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

আবরার হত্যা মামলার ২৫ আসামির বিচার শুরু

আপডেট টাইম : ০৮:০৬:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

আলোর জগত ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ২৫ আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান মঙ্গলবার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতি কার্যদিবসে একটানা এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে।এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল এ কথা জানান।

গত ২ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রার্থনা করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল, এহসানুল হক সমাজী ও অ্যাডভোকেট মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া। ওইদিন আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবীরা অব্যাহতি (ডিসচার্জ) চেয়ে শুনানি করেন। আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, আমিনুল গণি টিটো, নজরুল ইসলাম, মঞ্জুরুল আলম, ফারুক আহাম্মদ, প্রিয়লাল সাহা, জাহিদুর রহমান।

অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আইন অনুযায়ী সময়ের মধ্যেই এ মামলার বিচার শেষ হবে বলে আশা করছি। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত টানা সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত ৬ অক্টোবর হত্যা করা হয়। বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটের এ মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার। ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছিল। ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় আবরার ফাহাদকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। আবরার বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করে। পাঁচ সপ্তাহ তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ অভিযোগপত্র গ্রহণ করে গত ১৮ নভেম্বর পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তাদের মধ্যে একজন পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এখনো তিনজন পলাতক।

এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, বহিষ্কৃত উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, বহিষ্কৃত সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মোজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, ইসতিয়াক হাসান মুন্না, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির ও আকাশ হোসেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, এস এম মাহমুদ সেতু, এজাহারের বাইরের ছয় আসামি হলেন-বুয়েট ছাত্রলীগের গ্রন্থণা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, মাহামুদ সেতু ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম। আর পলাতক বাকি তিন আসামি হলেন- ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র মাহমুদুল জিসান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের মুজতবা রাফিদ।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন। তাদের সকলকে বুয়েট ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত ১৫ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তর করে আদেশ জারি হয়। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যে কোনো মামলা ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা না গেলে আরও ৪৫ দিন সময় নিতে পারে আদালত।